পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটায় বঙ্গোপসাগরে এক জেলের জালে ধরা পড়েছে প্রায় ২২ কেজি ওজনের একটি বিরল সামুদ্রিক কোরাল মাছ। শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে মাছটি কুয়াকাটা মাছ বাজারে বিক্রি হয় ৩৫ হাজার টাকায়। এই বিরল মাছ দেখতে এবং কিনতে ভিড় জমান অনেক ক্রেতা।
আল-আমিন মাঝি নামের এক জেলে সকালে বঙ্গোপসাগরের লেম্বুর বন এলাকায় ইলিশ ধরতে গিয়ে হঠাৎ ভাসমান অবস্থায় এই বিরল কোরাল মাছ দেখতে পান। তিনি জাল ফেলে মাছটি ধরেন এবং কুয়াকাটা মাছ বাজারে নিয়ে আসেন। মাছটির ওজন ছিল ২১ কেজি ৭০০ গ্রাম। উন্মুক্ত ডাকের মাধ্যমে মাছটির দাম হাঁকানো হয় প্রতি কেজি ১ হাজার ৬০৭ টাকা। স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. খলিল হাওলাদার মাছটি কিনে নেন ৩৪ হাজার ৮৮০ টাকায়।
জেলে আল-আমিন জানান, “এত বড় মাছ পাবো ভাবিনি। প্রতিদিনের মতো ইলিশ ধরতে গিয়ে মাছটি ভাসতে দেখে জাল ফেলে ধরি। তবে মাছটি কেন ভেসে ছিল, তা বলতে পারছি না। তবে মাছটি জীবিত ছিল। মাছটি বিক্রি করে আমি অনেক আনন্দিত, কারণ মাছ কম পেলেও এটি আমাদের অনেক উপকারে এসেছে।”
মাছের ক্রেতা মো. খলিল হাওলাদার জানান, “এত বড় মাছ সাধারণত পাওয়া যায় না। মাছটি পেয়ে জেলেরা খুবই আনন্দিত ছিলেন। আমি মাছটি কিনে ঢাকার এক পর্যটকের কাছে প্রতি কেজি ১ হাজার ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি করে দিয়েছি। তিনি মাছটি ঢাকায় নিয়ে যাবেন।”
উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন, কুয়াকাটার (উপরা) আহ্বায়ক কেএম বাচ্চু বলেন, “জেলেদের ভাষ্য অনুযায়ী মাছটি ভাসমান ছিল। তবে সাধারণত মাছ ভেসে থাকে না। মাছের পেটে ডিম বা অতিরিক্ত ওজন, রোগাক্রান্ত হওয়া, পেটে ব্যথা, মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাব, পলিথিন বা প্লাস্টিক খেলে এভাবে ভেসে থাকতে পারে। তবে এখন এমন বিরল মাছ তুলনামূলক কম পাওয়া যায়, আগে ৫ থেকে ৭ বছর আগে বেশি পাওয়া যেত।”
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, “এটি নিষেধাজ্ঞার ফসল। ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা সমুদ্রে মাছ শিকার করতে নেমেছে। স্বাভাবিকভাবেই জেলেদের জালে বড় মাছ ধরা পড়বে। জেলেরা সঠিকভাবে নিষেধাজ্ঞা পালন করেছে, বিধায় সামনের দিনগুলোতে তাদের জালে ভালো সংখ্যক মাছ ধরা পড়বে। শুধু কোরাল নয়, ইলিশসহ সামুদ্রিক অন্যান্য সব ধরনের মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়বে বলে আমি আশাবাদী।”