পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ১ কেজি ৮০০ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশ মাছ নিলামে ৫ হাজার ৬২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ভোররাতে কুয়াকাটার গঙ্গামতি সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলে শিনু গাজীর জালে মাছটি ধরা পড়ে। সকাল ১০টার দিকে কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারে রাসেল ফিস আড়তে মাছটি নিলামে তোলা হলে স্থানীয় ব্যবসায়ী নাসির মুন্সি প্রতি কেজি ৩ হাজার ১২৫ টাকা দরে মাছটি ক্রয় করেন। এই ইলিশ দেখতে ভিড় জমান অনেকেই।
জেলে শিনু গাজী জানান, মাছ ধরার উদ্দেশ্যে সাগর মোহনায় চর বিজয় দ্বীপের পূর্ব পাশে জাল ফেললে অন্যান্য মাছের সঙ্গে এই বড় ইলিশ ধরা পড়ে। তিনি বলেন, “বড় মাছের দাম বেশি, তবে পেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালো থাকা যায়।” রাসেল ফিস আড়তের ব্যবসায়ী রাসেল জানান, এত বড় মাছ এই বাজারে খুব কম পাওয়া যায়। নিলামে মাছটি ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা মন দরে নাসির মুন্সি ক্রয় করেন।
স্থানীয় ক্রেতা ইমরান গাজী আক্ষেপ করে বলেন, “৩ হাজার টাকা কেজি দরে ইলিশ আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। আগে বছরে অন্তত একবার ঘরে ইলিশ উঠত, এখন সেটা স্বপ্ন হয়ে গেছে। বাজারে গিয়ে শুধু তাকিয়ে দেখি, কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই। এটি এখন বিত্তবানদের খাবার, আমাদের নাগালের বাইরে।”
ওয়ার্ল্ডফিশ-বাংলাদেশের গবেষণা সহকারী মো. বখতিয়ার রহমান বলেন, “বড় ইলিশে ফ্যাট বেশি থাকায় এতে ওমেগা-৩ ও ভিটামিন থাকে, যা হৃদরোগ, চোখের সমস্যা ও মস্তিষ্কের জন্য উপকারী।”
তিনি আরও বলেন, ছোট ইলিশের অযাচিত আহরণ, নদীতে পানি কমে যাওয়া, বাঁধ ও স্লুইস গেটের কারণে মাছের অভিবাসনে বাধা, অবৈধ জাল ব্যবহার ও সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির অভাবের ফলে বড় ইলিশের সংখ্যা কমছে। পানি দূষণ, প্ল্যাঙ্কটনের ঘাটতি, জলবায়ু ও লবণাক্ততার পরিবর্তন ইলিশের প্রজনন ও খাদ্য সরবরাহে প্রভাব ফেলছে, যা বড় ইলিশের সংখ্যা কমার মূল কারণ।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, “এটি অত্যন্ত ভালো খবর। এটি নিষেধাজ্ঞার সুফলও বলা যায়। এ সাইজের মাছ মূলত গভীর সমুদ্রে থাকে। জালের প্রশস্ততা বাড়ালে এমন সাইজের মাছ বেশি ধরা পড়বে।”