প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক গত ১৭ জুলাই ২০২৫-এ জারিকৃত পরিপত্রের বিরুদ্ধে, যেখানে কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, পটুয়াখালীতে শত শত কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ মানববন্ধন করেছেন। কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদ পটুয়াখালী জেলার ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টার বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
রবিবার (৩ আগস্ট) বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কালিকাপুর প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বাদল, রেনেসাঁ আইডিয়াল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক ইঞ্জিনিয়ার মো. রাসেল হোসেন, ছোট বিঘাই প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক আহসানুল কবির, প্রভাতি প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক আছিয়া বেগম, ব্রাইট ফিউচার প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক শেফা আক্তার, রোজ গার্ডেন প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক সাফিয়া আক্তার, আদর্শ মডেল প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. হাসান এবং কলাপাড়া রাইজিং সান প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান মাসুদ।
বক্তারা বলেন, ২০০৮ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা চালু হলে সরকারি, বেসরকারি, কিন্ডারগার্টেন এবং এনজিও পরিচালিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিল। পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রাথমিক বৃত্তি প্রদান করা হতো। ২০২২ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বন্ধ হওয়ার পর পুনরায় ৫ম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা চালু হলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এতে অংশ নিতে পারে। কিন্তু ২০২৫ সালের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্বাহী কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, শুধুমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে, যা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য বৈষম্যমূলক।
বক্তারা আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দেশের অসংখ্য ছাত্র-জনতা জীবন উৎসর্গ করেছে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত বৈষম্যমুক্ত শিক্ষাব্যবস্থার চেতনার পরিপন্থী। তারা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে সকল শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষা উপদেষ্টার প্রতি জোর দাবি জানান।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষক ও শিশু শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টার বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।