পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ‘এফবি সাগরকন্যা’ নামের একটি মাছধরা ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ পাঁচ জেলের মধ্যে নজরুল ইসলাম (৬০) নামের এক জেলের মরদেহ এবং পৃথক স্থান থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির (৪০) মরদেহ উদ্ধার করেছে কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সৈকতের মীরাবাড়ি পয়েন্ট থেকে নজরুল ইসলামের মরদেহ এবং গঙ্গামতি পয়েন্ট থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিকাশ মন্ডল।
নৌ-পুলিশের ইনচার্জ বিকাশ মন্ডল জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে মরদেহ ভেসে আসার খবর পেয়ে সৈকতের দুটি পৃথক স্থান থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়। মীরাবাড়ি পয়েন্টে উদ্ধার হওয়া মরদেহটি কালো রঙের রেইনকোট পরিহিত ছিল, যিনি নজরুল ইসলাম হিসেবে সনাক্ত হয়েছেন। তার ছেলে নাসির হাওলাদার পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। নজরুল কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের মঞ্জুপাড়া ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত তাজেম আলী হাওলাদারের ছেলে ছিলেন।
গঙ্গামতি পয়েন্ট থেকে উদ্ধার হওয়া অপর মরদেহটির পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দা মনসুর হাওলাদার জানান, “সকালে সাগরপাড় থেকে কুয়াকাটা যাচ্ছিলাম। তখন দেখি সৈকতে মরদেহটি পড়ে আছে। শরীরের কিছু অংশ গলে গেছে। সম্ভবত কয়েক দিন আগে মারা গেছে।”
উদ্ধারকৃত মরদেহ দুটি আইনি প্রক্রিয়ার জন্য মহিপুর থানায় হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুলাই বঙ্গোপসাগরের শেষ বয়ার ৭৫ কিলোমিটার গভীরে ‘এফবি সাগরকন্যা’ নামের ট্রলারটি ঝড় ও উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। ট্রলারটিতে ১৫ জন জেলে ছিলেন। টানা চার দিন সমুদ্রে ভেসে থাকার পর ১০ জন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তবে পাঁচ জন নিখোঁজ ছিলেন, যার মধ্যে নজরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার হলো। বাকি চার জেলে—আবদুর রশিদ, রফিক, ইদ্রিস, এবং হারুন—এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ হাসান জানান, ট্রলার মালিক কিশোর হাওলাদার গত ২৬ জুলাই নিখোঁজ জেলেদের নাম উল্লেখ করে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। নিখোঁজদের সন্ধানে নৌ-পুলিশ ও স্থানীয় জেলেরা তল্লাশি চালাচ্ছে।
এই ঘটনায় উপকূলীয় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয় জেলেরা নিখোঁজ বাকি জেলেদের সন্ধানে বঙ্গোপসাগরে তল্লাশি অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন।