পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ধুলিয়া লঞ্চঘাটে যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যের দ্বিগুণ হারে টিকিট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। প্রবেশ টিকিটের নির্ধারিত মূল্য ৫ টাকা হলেও, ঘাটে টিকিট বিক্রির সময় যাত্রীদের কাছ থেকে ১০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এর ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
সরেজমিনে ধুলিয়া লঞ্চঘাট পরিদর্শনে দেখা গেছে, টিকিটে স্পষ্টভাবে ‘মূল্য ৫ টাকা’ লেখা থাকলেও, ইজারাদারের লোকজন যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ মূল্য আদায় করছেন। যাত্রীরা এ বিষয়ে প্রশ্ন বা প্রতিবাদ করলে ইজারাদারের লোকজন তাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন এবং কিছু ক্ষেত্রে অপমানজনক ভাষায় কথা বলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমরা ঢাকায় যাওয়ার জন্য ধুলিয়া লঞ্চঘাটে এসেছিলাম। টিকিটের জন্য ১০ টাকা করে আদায় করা হয়, অথচ টিকিটে স্পষ্ট লেখা ৫ টাকা। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে উল্টো তাচ্ছিল্য আর অপমান শুনতে হয়।”
জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ধুলিয়া লঞ্চঘাটের ইজারা নিয়েছেন নাইম সিকদার তারেক, যিনি বাউফল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব ছিলেন। ইজারা নেওয়ার পর থেকে এই ঘাটে একটি ‘টিকিট সিন্ডিকেট’ গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। কোনো নিয়ম-নীতি না মেনে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে, যা সরকারের রাজস্ব ক্ষতির পাশাপাশি যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই অনিয়মের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছে এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই নীরবতার কারণে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, ইজারাদার কি প্রভাবশালী কোনো বলয়ের ছত্রছায়ায় এই অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন?
ইজারাদার নাইম সিকদার তারেকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সচেতন মহলের মতে, এই টিকিট সিন্ডিকেট অবিলম্বে বন্ধ না করা হলে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। ভুক্তভোগীরা এই বেআইনি টিকিট আদায় বন্ধ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইয়াসীন সাদেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “অভিযোগটি আমার জানা ছিল না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা এবং যাত্রীরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত এই সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার এবং টিকিটের নির্ধারিত মূল্য নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।