ভোলার দৌলতখানে মিথ্যা মামলা দিয়ে অফিস সহকারীকে ৪ বছর যাবৎ কলেজ থেকে দুরে রেখেছে দূর্ণীতিবাজ প্রিন্সিপাল। যদিও বর্তমানে মহামান্য আদালত এ মিথ্যা মামলাটি থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আফিস সহকারী মোঃ আব্দুস সহিদকে। এ ব্যাপারে ভূক্তভোগীর অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, দৌলতখান উপজেলার চরখলিফা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মোঃ রুহুল আমিনের ছেলে আব্দুস সহিদ সরকারি বিজ্ঞপ্তির আলোকে স্থানীয় আলী আশ্রাফ মহা বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে চাকুরির জন্য অবেদন করে। কিন্তু ওই মুহুর্তে তার থেকে তৎকালিন ওই কলেজের দূর্ণীতিবাজ প্রিন্সিপাল মেহেদী মাসুদ মুকু খান ৫ লাখ টাকা ঘুষ চায়। তখন এ ঘুষের টাকা দিতে আপত্তি করে প্রার্থী আব্দুস সহিদ। পরবর্তিতে নিজেস্ব যোগ্যতা বলে ওই কলেজে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে চাকুরি হয় প্রার্থী আব্দুস সহিদের। কিন্তু এ বিষয়টি সহজ ভাবে মেনে নিতে পারেনি পরবিত্তু লোভি, ঘুষ খোর প্রিন্সিপাল মুকু খান। এজন্যই শেষ রক্ষা হয়নি আব্দুস সহিদের। সূত্রে জানাগেছ, আলী আশ্রাফ মহা বিদ্যালয়টি স্থাপিত হবার প্রায় ৭ বছর পর শিক্ষকদের বেতন হয় এককালিন। তখন আব্দুস সহিদ একসাথে বড় অংকের কিছু টাকা হাতে পায়। ওই মুহুর্তে সহিদের টাকার উপর লোলুপ দৃষ্টি পরে প্রিন্সিপাল মুকু খানের। মুকু খান সে টাকা থেকে একটা অংশ দেয়ার জন্য জোড়ালো ভাবে চাঁপ প্রোয়োগ করে আব্দুস সহিদকে। কিন্তু এ চেষ্টায়ও ব্যার্থ হয় প্রিন্সিপাল মুকু খান। সহিদ সরাসরি মুকুখানকে বলে দেয় আমি ঘুষ দিয়ে আপনার কলেজে কোন চাকুরি করবো না। এর পরই পুরো দমে প্রিন্সিপাল মুকু খানের সাথে শত্রুতা শুরু হয় আব্দুস সহিদের। ওই মুহুর্তে মুকু খান বিষটি একটু চেপে গেলেও পরবর্তিতে কৌশলে আব্দুস সহিদকে ওই কলেজ থেকে তাড়ানের জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে থাকে। উল্লেখ্য মুকু খান কলেজের চাকুরির পাশা পাশি দৌলতখান উপজেলার চর খলিফা ইউনিয়নের একজন প্রভাবশালী চেয়ারম্যান ছিলো। গত আওয়ামী সরকারের আমলে ওই এলাকায় একক রাম রাজত্ব কায়েম করতো প্রভাবশালী প্রিন্সিপাল মুকু খান। কারণ তৎকালিন দৌলতখান উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুখান ছিলো মুকু খানের ভগ্নিপতি। অন্যদিকে মুকু খান ছিলো আওয়ামীলীগের একজন প্রভাবশালী নেতা। জানাগেছে, মুকু খানের প্রভাব ও দাপটের ভয়ে ওই এলাকার সাধারণ জনগণ উচ্চ স্বরে কথা বলতে পারতো না। তেমনি মুকু খানের অপ-শক্তি ও ক্ষমতার কাছে জিম্মি ছিলো অফিস সহকারী আব্দুস সহিদ ও ওই এলাকার জনগণ। আব্দুস সহিদ বার বার মুকু খানের চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেয়াতে তার উপর নেমে আসে নানামুখি জুলুম অত্যাচার। আব্দুস সহিদ ওই কলেজে অফিস সহকারী পদে চাকুরি করলেও মুকু খান তাকে দিয়ে কলেজের ডিউটির বাইরে বিভিন্ন ধরণের কাজ করাতো বাধ্যতামূলক। এক কথায়, অফিস সহকারী আব্দুস সহিদ প্রিন্সিপাল মুকুখানের কাছে জিম্মি দশায় আবদ্ধ হয়ে ছটফট করে অসহায় জীবন কাটাচ্ছিলো দীর্ঘদিন যাবৎ। আব্দুস সহিদ মুকু খানের কোন কাজে অপত্তি ও প্রতিবাদ করলে সে সহিদকে চাকুরিচুত্য করার হুমকি দিতো বার বার। এমতাবস্থায় চাকুরি হাড়াবার ভয়ে আব্দুস সহিদ বিভিন্ন সময় মুকু খানের কাজগুলো করতেহতো বাধ্যতামূলক। এতেও ক্ষান্ত হয়নি দূর্ণীতিবাজ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মুকু খান। শেষ পর্যন্ত মুকু খান তার পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহিদুল হোসেন টিটুকে বাদী করে আব্দুস সহিদের নামে আদালতে একটি ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে। মামলা নং- এমপি-১৫৪/২১, সিআর ৭০/২২ (দৌ)। পরবর্তিতে এ মামলায় আব্দুস সহিদের নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু হলে পুলিশের ভয়ে সে প্রায় ৪বছর যাবৎ কলেজ ও নিজ পরিবার ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে পালিয়ে মানবেতর জীবন কাটায়। এরপর বারিশাল শিক্ষা বোর্ড থেকে কলেজের ঠিকানায় আব্দুস সহিদকে কারণ দর্শানোর জন্য একাধিকবার চিঠি পাঠালেও এ চিটিগুলো গায়েব করে দেয় মুকু খান ও তার সহযোগীরা। আব্দুস সহিদ জানায়, গত চার বছরে আমি বরিশাল শিক্ষা বোর্ড থেকে কারণ দর্শানোর চিঠি পেয়েছি মাত্র একটি। যা ছিলো (ষোলতম)। উল্লেখ্য গত ১৫/০৭/২০২৫ইং তারিখে মহামান্য আদালত এ মামলাটি থেকে বেকসুর খালাশ প্রদান করে আব্দুস সহিদকে। ওই এলাকার সচেতন মহল জানান, বিগত দিনে আব্দুস সাহিদকে নিয়ে যা হয়েছে তা সবই ছিলো তৎকালিন প্রভাবশালী চেয়ারম্যান ও প্রিন্সপাল মুকু খানের ক্ষমতার অপ-ব্যবহার। তাই এ বিষয়টি বিবেচনা পূর্বক অব্দুস সহিদকে চাকুরিতে যোগদান করার অনুমোতি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ প্রদান করেণ ওই এলাকার সচেতন মহল। এব্যাপারে অভিযুক্ত প্রিন্সিপাল মুকু খানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে জানাযায়, সে বিভিন্ন দূর্ণীতির অভিযোগে গত ৫আগষ্ট ২০২৪ইং তারিখের পর থেকে পলাতক রয়েছে।