1. bulletindhaka9@gmail.com : ঢাকা বুলেটিন : ঢাকা বুলেটিন
  2. info@www.dhakabulletin.news : ঢাকা বুলেটিন :
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
ভোলা সদর উপজেলার শিক্ষা উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনা নিয়ে পাবলিক হেয়ারিং অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীতে ট্রলার মাঝি হত্যার মামলায় পলাতক প্রধান অভিযুক্ত সোহেল ফকির গ্রেফতার পরীক্ষার হলে ফোন নিয়ে প্রবেশে শিক্ষার্থীকে আটক করায় শিক্ষককে ছুরিকাঘাতে হত্যাচেষ্টা কুলাউড়ায় ভারতীয় ৩ লাখ টাকার সিগারেট জব্দ কমলগঞ্জে প্রভাবশালীর বাঁধায় চলাচলের রাস্তাটি প্রতিবন্ধকতার অভিযোগ ভিয়েতনামে Xbox উৎপাদনে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা ফক্সকনের রুপি ৯০ ছাড়িয়ে পতন, মার্কিন শুল্ক ও বিনিয়োগ বহিঃপ্রবাহে চাপ ফিউজলেজ প্যানেলে ত্রুটি: ৬২৮টি এয়ারবাস A৩২০ পরিদর্শনের মুখে ১৯ দেশের নাগরিকদের অভিবাসন আবেদন স্থগিত করল ট্রাম্প প্রশাসন ব্ল্যাকরক দীর্ঘমেয়াদী ট্রেজারিগুলোতে মতামত পরিবর্তন করল, এআই অর্থায়নের ঢেউয়ে ঋণ খরচ বৃদ্ধির আশঙ্কা

জোয়ারের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত ভোলা: খোলা সুইচ গেটে ডুবছে চর কুকরী মুকরি, দুর্ভোগ চরমে

মো: সামিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

 

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও অমাবস্যার জোয়ার যেন অভিশাপ হয়ে নেমে এসেছে ভোলার উপকূলীয় অঞ্চলে। মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমার প্রায় ১৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে জেলার বিস্তীর্ণ জনপদ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। আকস্মিক এই তাণ্ডবে বাঁধের বাইরের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায় ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর কুকরী মুকরির সুইচ গেট খোলা থাকায় পরিস্থিতি ধারণ করেছে ভয়াবহ রূপ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে মানবসৃষ্ট এই সংকট যোগ হয়ে সেখানকার মানুষের দুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে।

সরেজমিনে ভোলার বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকা ঘুরে দেখা যায় এক অবর্ণনীয় দুর্ভোগের চিত্র। সদরের রাজাপুর, ইলিশা থেকে শুরু করে চরফ্যাশন ও মনপুরার নিম্নাঞ্চল পানির নিচে। কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর সমান পানিতে ভাসছে বসতঘর, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি ও মাছের ঘের। ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরিঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন, যা যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়িয়েছে বহুগুণ। পানিবন্দি মানুষের ঘরে ঘরে কান্নার রোল। রান্নাঘরের নিভে যাওয়া চুলো আর ভাসমান হাঁড়ি-পাতিলই বলে দেয় তাদের অসহায়ত্বের কথা। রাজাপুরের বাসিন্দা আমেনা বেগম অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, “সকালের বৃষ্টি-বাতাসের পর দুপুরের জোয়ারে সব ভাসিয়ে নিয়ে গেল। রান্না করার উপায় নেই, ছেলেমেয়ে নিয়ে না খেয়ে আছি। আমরা এখন পুরোপুরি গৃহবন্দি।”

তবে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে ভোলার দক্ষিণের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর কুকরী মুকরিতে। এখানকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুইচ গেট দীর্ঘদিন ধরে খোলা পড়ে থাকায় জোয়ারের পানি বাঁধের ভেতরের অংশেও অবাধে প্রবেশ করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, গেটটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউকে পাওয়া যায় না। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের চেয়েও কর্তৃপক্ষের এই অবহেলা তাদের বেশি ভোগাচ্ছে। এ বিষয়ে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)-এর স্থানীয় টিম লিডার মোঃ জুয়েল মজুমদার বলেন, “কুকরী মুকরির বাঁধের ভেতর ও বাহির—উভয় অংশই এখন পানির নিচে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবহেলার কারণে এই বিপর্যয়। প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে, ভেসে গেছে ২০০-র বেশি পুকুরের মাছ। ফসল ও হাঁস-মুরগির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমি নিজে দেখেছি, অনেক বৃদ্ধ ও গর্ভবতী নারী মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন।” একই সুরে অ্যাডাপটেশন লার্নিং সেন্টারের ক্লাইমেট চেঞ্জ অফিসার মো. মনিরুল হক প্রিন্স উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “সুইচ গেটে জনবল না থাকায় এই মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। জরুরি ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।”

এই বিষয়ে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ হাসানুজ্জামান জানিয়েছেন, মেঘনার পানি তজুমদ্দিন পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা এ মৌসুমে সর্বোচ্চ। পানি নামলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। তবে এই কথায় ভরসা পাচ্ছেন না দুর্গতরা। উপকূলের হাজারো মানুষ এখন তাকিয়ে আছে প্রশাসনের দিকে। তারা জরুরি ভিত্তিতে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, চিকিৎসা সহায়তা এবং গবাদিপশুর জন্য খাদ্য ও অস্থায়ী উঁচু আশ্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি, অবহেলায় জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় এনে চর কুকরী মুকরির সুইচ গেটটি দ্রুত মেরামত ও সচল করার জন্য আকুতি জানাচ্ছেন তারা। দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপই পারে তাদের এই অবর্ণনীয় দুর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব করতে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট