বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম আবারও নিম্নমুখী হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্ক পুনর্বহাল এবং ওপেক প্লাস জোটের উৎপাদন বাড়ানোর প্রত্যাশা—এই দুইটি বিষয়ই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি মজুদের অপ্রত্যাশিত বৃদ্ধি এবং মজবুত শ্রমবাজারের উপাত্তও বাজারকে প্রভাবিত করেছে।
লন্ডনের ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৮.৫০ ডলারে নেমে এসেছে, যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় ১.২ শতাংশ কম। একইসঙ্গে, ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) অপরিশোধিত তেলের দামও উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন প্রশাসন যে আবার চীনের ওপর শুল্ক আরোপের পথে হাঁটতে পারে, সেই সম্ভাবনা বিনিয়োগকারীদের উদ্বিগ্ন করে তুলছে। এতে বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রবাহে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা থেকে জ্বালানি চাহিদা হ্রাস পাওয়ার ধারণা তৈরি হয়েছে।
এছাড়া, ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (EIA) জানিয়েছে, দেশটির অপরিশোধিত তেলের মজুদ গত সপ্তাহে প্রত্যাশার তুলনায় বেশি বেড়েছে। অন্যদিকে, নতুন চাকরির সংখ্যা বেড়ে যাওয়া শ্রমবাজারের শক্তি নির্দেশ করে, যা আবার ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার দীর্ঘদিন উচ্চ রাখার সম্ভাবনা বাড়ায়—এবং সেটিও তেলের চাহিদা কমিয়ে দিতে পারে।
জুলাই মাসে ওপেক প্লাসের বৈঠকে উৎপাদন সীমিত রাখার প্রতিশ্রুতি থাকলেও আগস্ট থেকে কিছু সদস্য দেশের উৎপাদন ধাপে ধাপে বাড়তে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে সরবরাহ বৃদ্ধির আশঙ্কাও বাজারকে চাপে রেখেছে।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, নীতি সিদ্ধান্ত এবং জ্বালানি চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য—এই তিনের সম্মিলিত প্রভাবেই জ্বালানি বাজারের অস্থিরতা বেড়েই চলেছে। বিনিয়োগকারীরা এখন আগামি ওপেক+ বৈঠক এবং মার্কিন বাণিজ্যনীতির দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন।