২৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। আগামী বুধবার (২ জুলাই) অনুষ্ঠেয় এই সম্মেলনকে ঘিরে শহরজুড়ে বইছে উৎসবমুখর পরিবেশ। শহরের অলিগলি ছেয়ে গেছে রঙিন ব্যানার ও ফেস্টুনে। এ উপলক্ষে জেলার ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রেসগুলোতে দেখা গেছে নজিরবিহীন ব্যস্ততা। গত দুই সপ্তাহে প্রিন্টিং বাজারে লেনদেন ছাড়িয়েছে অর্ধকোটি টাকা, যা জেলার ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব রেকর্ড বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পটুয়াখালীর ‘প্রতিভা ডিজিটাল’, ‘এমআর গ্রাফিক্স’, ‘আপন ডিজিটাল’, ‘কোয়ালিটি ডিজিটাল’, ‘মা ডিজিটাল’সহ অন্তত ১৩টির বেশি ডিজিটাল প্রেসে টানা ১৫ দিন ধরে ব্যানার-ফেস্টুন ছাপানোর কাজ চলছে। অধিকাংশ প্রেসে দিনে গড়ে ৫ হাজার স্কয়ার ফিটের বেশি প্রিন্টিং কাজ হচ্ছে। একাধিক প্রেস ইতিমধ্যে অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
প্রেস মালিকদের ভাষ্যে, একেকটি প্রেস পেয়েছে গড়ে ৪-৫ লাখ টাকার অর্ডার। প্রেসগুলোর অনেকে সময়মতো ডেলিভারি দিতে না পারায় কিছু অর্ডার বরিশাল ও ঢাকা থেকে এনে মেটানো হচ্ছে।
প্রতিভা ডিজিটালের কারিগর মো. বায়জিদ হোসেন বলেন,
“দিনরাত কাজ করছি। এমন চাপ গত ১০ বছরে দেখিনি। সময়মতো ডেলিভারি দিতে পারছি না বলে অনেকে বিরক্ত হচ্ছেন, তবে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
শুধু ব্যানার নয়, ব্যানার বাঁধার জন্য কাঠ, পেরেক ও স্টিকারের চাহিদাও বেড়েছে কয়েকগুণ। প্রতিটি ৫ বাই ৪ ফুট ব্যানার তৈরি করতে খরচ হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। কাঠ সরবরাহকারী ছালাম বলেন,
“প্রতিদিন অর্ডার সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি। এখন নিজে ছাড়াও আরও দুজনকে কাজে লাগাতে হয়েছে।”
পটুয়াখালী বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক খন্দকার আসাদুজ্জামান কাজল বলেন,
“এই সম্মেলন আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। পটুয়াখালীর প্রেসগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে অর্ডার দিয়েছি। তবে চাপ সামলাতে না পেরে কিছু কাজ ঢাকাতেও করাতে হয়েছে।”
পটুয়াখালী প্রিন্টিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ হুমায়ুন জানান,
“জেলায় ডিজিটাল প্রিন্টিংয়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মতো বাণিজ্য হয়েছে। এমন চাপ আগে কখনো দেখা যায়নি। সাধারণ বাণিজ্যিক ও পার্টি অর্ডার আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।”