1. bulletindhaka9@gmail.com : ঢাকা বুলেটিন : ঢাকা বুলেটিন
  2. info@www.dhakabulletin.news : ঢাকা বুলেটিন :
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৪:১২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
ভোলায় দারিদ্র বিমোচন ও বিদ্যমান বৈষম্য লাঘব প্রকল্প পরিচিতি সভা মাধবপুরে নিখোঁজ গৃহবধূর লাশ উদ্ধারের পাঁচ দিন পর স্বামী গ্রেফতার বাউফলের বগা ফেরিঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে ইজারা বাতিল পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও স্বারকলিপি প্রদান বাউফলের ধুলিয়া লঞ্চঘাটে টিকিট সিন্ডিকেট: দ্বিগুণ মূল্যে টিকিট বিক্রির অভিযোগ চীনের শীর্ষ নেতারা অর্থনীতির সমর্থন ও মূল শিল্পে ‘অনিয়ন্ত্রিত প্রতিযোগিতা’ দমনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তেলের দাম কমেছে: ট্রাম্পের আল্টিমেটামের পর সরবরাহ ঝুঁকি নিয়ে বাজারের পর্যবেক্ষণ ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠনগুলো গাজায় গণহত্যার অভিযোগে জাতীয় নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করেছে জার্মান ক্যাবিনেট ২০২৬ সালের বাজেট অনুমোদন করেছে বৈশ্বিক শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া: ফেডের সিদ্ধান্ত ও মার্কিন শুল্কের সময়সীমার অপেক্ষায় বিনিয়োগকারীরা

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতাল: ৬০০ কোটি টাকার সেবা প্রতিষ্ঠান এখন ‘আবাসিক হোটেল’!

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
  • ১২১ বার পড়া হয়েছে

দেশের একমাত্র অত্যাধুনিক সরকারি চক্ষু হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, যার নির্মাণ ও সরঞ্জামে ব্যয় হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা, তা গত ১৩ দিন ধরে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখে জুলাই আন্দোলনে আহত কিছু ব্যক্তির দখলে রয়েছে। হাসপাতালটি এখন যেন তাদের জন্য ‘আবাসিক হোটেল’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ৫,০০০ রোগী এখান থেকে সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন।

গত ২৮ মে, ‘ভুল বোঝাবুঝি’র জেরে জুলাই আন্দোলনে আহতরা হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের ওপর হামলা চালান। এতে ১৫ জন আহত হন। নিরাপত্তারক্ষীদের তালাবদ্ধ গেট ভেঙে লাঠিসোঁটা ও রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটানোর ঘটনায় চিকিৎসক-কর্মীরা হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এরপর থেকে হাসপাতালের সব সেবা বন্ধ। অন্তর্বর্তী সরকার আহতদের জন্য খাবার সরবরাহ করলেও চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করতে ব্যর্থ হয়েছে।

৪ জুন পুলিশি পাহারায় জরুরি বিভাগ চালু করা হলেও, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। দেশসেরা চক্ষু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড ৫৫ জন ভর্তি আহতের মধ্যে ৩০ জনের সঙ্গে বৈঠক করে। বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছিল, আহতদের হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই; তাদের ছাড়পত্র দিয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফলোআপের পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু আহতদের একাংশ এই সিদ্ধান্ত মানেনি, রিলিজ পেপার ছিঁড়ে ফেলে এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। এতে আবারও কয়েকজন চিকিৎসক হাসপাতাল ত্যাগ করেন।

জুলাই আহতরা হাসপাতাল দখল করে রাখার পেছনে পাঁচটি কারণ উঠে এসেছে:

  1. পুনর্বাসন ও বিদেশে চিকিৎসার আশা: হাসপাতালে থাকলে সরকারের নজরে থাকা যায় এবং ইউরোপ-আমেরিকায় চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের সম্ভাবনা বাড়ে।
  2. অনৈতিক কার্যক্রম: কেউ কেউ ভর্তি, অপারেশনের সিরিয়াল বা নিয়োগ-টেন্ডারে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছেন।
  3. থাকার জায়গার অভাব: ঢাকায় থাকার জায়গা না থাকায় এবং কারো কারো বিরুদ্ধে মাদক মামলা থাকায় হাসপাতালে থাকছেন।
  4. রাজনৈতিক কর্মসূচি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা জাতীয় নাগরিক পার্টির কর্মসূচিতে অংশ নিতে হাসপাতালে অবস্থান।
  5. সুবিধা ভোগ: হাসপাতালে থাকলে খাবার ও থাকার সুবিধা পাওয়া যায়, এবং সরকারের কাছ থেকে ফ্ল্যাট বা অন্য সুবিধা আদায়ের সম্ভাবনা থাকে।

৬ জুন পর্যন্ত হাসপাতালে মাত্র ৪ জন ভর্তি এবং ৩ জন বহিরাগত আহত অবস্থান করছেন। বাকিরা বাড়ি গেলেও রিলিজ নেননি, যাতে সুবিধামতো ফিরে আসতে পারেন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম জানান, আহতরা হাসপাতালকে দাবি আদায়ের ‘বার্গেনিং’য়ের জায়গা হিসেবে ব্যবহার করছেন।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, “জুলাই আহতদের ত্যাগকে আমরা সম্মান করি। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, এমনকি বিদেশেও পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখন তাদের ফলোআপ চিকিৎসার জন্য এই বিশেষায়িত হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই।” তিনি পুনর্বাসনের দাবি সমর্থন করলেও হাসপাতাল দখলকে অগ্রহণযোগ্য বলছেন।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান জানান, “আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। আহতদের বিদেশে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবি বিবেচনাধীন।” ঈদের ছুটির পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক জানান, “এই ঘটনা জুলাই আহতদের ত্যাগকে বিতর্কিত করছে। সরকার, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ছাত্র নেতাদের সমন্বিত কঠিন সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।”

জুলাই আহতদের একজন, হিল্লোল, বলেন, “আমরা আর দাবি নিয়ে কথা বলতে চাই না। সরকার যা ভালো মনে করে করুক। তবে হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের সেবা নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব।”

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের এই সংকট দেশের স্বাস্থ্যখাতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আহতদের পুনর্বাসন ও বিকল্প থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনা জরুরি। অন্যথায়, এই প্রতিষ্ঠানটি তার মূল উদ্দেশ্য—চক্ষু চিকিৎসা প্রদান—থেকে বিচ্যুত হয়ে থাকবে, যা দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট