পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) কৃষি অনুষদের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হোসাইন মোহাম্মদ আশিকের মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. এএসএম শামীম আল আজাদকে ‘অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি’ (ওএসডি) করা হয়েছে।
১৬ এপ্রিল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ডা. শামীম আল আজাদকে ওএসডি করে ঢাকার মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। একইসাথে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েনি।
১৪ এপ্রিল, সোমবার বিকেলে ক্যাম্পাসে ফুটবল খেলার সময় পুকুরে ডুবে যান আশিক। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, আশিককে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর প্রায় ৪০ মিনিট পর্যন্ত কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার পর থেকেই পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে শুরু হয় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ। ১৫ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা বরিশাল-বাউফল সড়ক অবরোধ করে এবং পরবর্তীতে পায়রা সেতুর টোল প্লাজায় অবস্থান নেন। আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলামও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন।
ভিসি ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমাদের একজন সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার অবহেলার কারণে আমরা হারিয়েছি। এটা শুধু একটি পরিবারের নয়, পুরো বিশ্ববিদ্যালয় কমিউনিটির অপূরণীয় ক্ষতি।”
ডা. শামীম আজাদকে ওএসডি করার সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিদ্ধান্তটিকে স্বাগত জানালেও, অনেক শিক্ষার্থী একে অপর্যাপ্ত উল্লেখ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আশিকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে যথাযথ বিচার এবং হাসপাতালের দায়ীদের শাস্তির বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।