অভ্যুত্থানকারী শিক্ষার্থীরা প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকারের কাছেই ক্ষমতা হস্তান্তর করার দাবি জানিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা জানিয়েছেন, এর বাইরে কোনো সরকার মেনে নেওয়া হবে না। একই সঙ্গে সন্ধ্যার মধ্যে নিরপরাধ ব্যক্তি, রাজবন্দী ও গুমকৃত ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
সোমবার বিকেলে এক বিবৃতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ হাসান এবং আসিফ মাহমুদ এ তথ্য জানান। তারা বলেন, “ফ্যাসিস্ট, খুনিদের বিচার বাংলার মাটিতে করা হবে, পালানোর সুযোগ দেওয়া হবে না। শুধু হাসিনা সরকারের পদত্যাগ নয়, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ করে নতুন বাংলাদেশ ও রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বিনির্মাণ করা হবে।”
সেনাপ্রধানের জাতির উদ্দেশে ভাষণ:
এদিকে বিকেলে জাতির উদ্দেশে ভাষণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জনগণকে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখেন। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখেন, একসঙ্গে কাজ করি। দয়া করে সাহায্য করেন। মারামারি সংঘাত করে আর কিছু পাব না। সংঘাত থেকে বিরত হোন। সবাই মিলে সুন্দর দেশ গড়েছি।”
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান আরো বলেন, “আপনারা আমাদের সহযোগিতা করেন। চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে।”
শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার নিরাপদ স্থানে গমন:
সোমবার দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা নিরাপদ স্থানে চলে যান বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক:
দুপুরে সেনা সদরদপ্তরে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে সরকার পতনের দাবি:
জুলাইয়ের শুরুতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। প্রথম সপ্তাহ রাজধানীর শাহবাগ ঘিরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলে। ১৪ জুলাই পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। এরপর দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সারাদেশে স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে আন্দোলন। বাড়তে থাকে প্রাণহানি। অবশেষে সরকার পতনের এক দফা দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে ছাত্র-জনতা।