সিরিয়ার অর্থনীতি চলতি বছর বিশ্বব্যাংকের ১% পূর্বাভাসের চেয়ে অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, শরণার্থীদের দেশে ফিরে আসার কারণে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুলকাদির হুসরিয়ে জানান, তারা নতুন মুদ্রা চালু করতে যাচ্ছে এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞা শিথিলকরণের ফলে আর্থিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।
সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুলকাদির হুসরিয়ে গত ৪ ডিসেম্বর নিউ ইয়র্কের ‘রয়টার্স নেক্সট’ কনফারেন্সে ভিডিও সংযোগে বলেন, সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধে ১৪ বছর শেষ হওয়ার পর সিরিয়ায় শরণার্থী নাগরিকরা দেশে ফিরে আসছেন, যা অর্থনীতির বিকাশ বাড়াচ্ছে। এর ফলে সিরিয়া ২০২৫ সালে বিশ্বব্যাংকের এক শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাসের বাইরে যাচ্ছে।
হুসরিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘সিজার’ নিষেধাজ্ঞার ব্যাপক শিথিলকরণের ঘটনা “একটি অলৌকিক” উপায়ে সিরিয়ার অর্থনীতিকে সুরক্ষা দিচ্ছে। মার্কিন ট্রেজারি ১০ নভেম্বর ঘোষণা দিয়েছে ১৮০ দিনের জন্য এই নিষেধাজ্ঞার স্থগিতাদেশ বাড়ানো হয়েছে, তবে এটি পুরোপুরি তুলে নেওয়ার জন্য কংগ্রেসের অনুমতি প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আশাবাদ ব্যক্ত করে বলছেন, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি উঠে যাবে, যা সিরিয়ার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং সম্পর্ক সুগম করবে।
তিনি আরও জানান, সিরিয়া অর্থಶুদ্ধি ও সন্ত্রাসবাদের তহবিল প্রতিরোধের কার্যক্রম পুনর্গঠন করছে, যা আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের জন্য আস্থার কারণ হবে। সম্প্রতি মার্কিন, তুর্কি, জর্দান ও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সার্বিক লেনদেন যাচাই নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক জুলাই মাসে পূর্বাভাস দিচ্ছিলো, ২০২৪ সালে সিরিয়ার অর্থনীতি ১.৫% সংকুচিত হবে, আর ২০২৫ সালে সেভাবে ১% বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে নিরাপত্তার অবনতি, তহবিল সংকোচন ও বিদেশি সহায়তার ঝুঁকির কারণে। তবে হুসরিয়ে এই পূর্বাভাসকে বাস্তবসম্মত বলে মনে করেন না কারণ ১.৫ মিলিয়ন শরণার্থী দেশে ফিরে আসার কারণে অর্থনীতি ইতোমধ্যেই বিস্তার পাচ্ছে।
সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন মুদ্রা চালু করতে যাচ্ছে, যা আটটি নোট denomination এ থাকবে এবং এতে দুইটি শূন্য বাদ দেওয়া হবে। এটি অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনার লক্ষ্যে নেওয়া একটি পদক্ষেপ। ১১ হাজারেরও বেশি প্রতি ডলার মুদ্রার বিনিময়হার হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। হুসরিয়ে বলেন, “নতুন মুদ্রা আর্থিক মুক্তির একটি প্রতীক হবে।”
একই সঙ্গে তিনি ভিসার সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম চালু করার বিষয়ে সানন্দে ঘোষণা দেন। এই নতুন ব্যবস্থার মাধ্যমে সিরিয়া মধ্যপ্রাচ্যের আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। ভিসা ও মাস্টারকার্ডের সঙ্গে দেশটির বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা চলছে।