পটুয়াখালীর মহিপুর থানায় ট্যুরিস্ট পরিচয়ে চালকদের ছুরিকাঘাত করে অটোগাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় আন্তঃজেলা ছিনতাইচক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় অভিযুক্তদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত চারটি বোরাক অটোগাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ কর্তৃক প্রদত্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত ২ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৩টায় মহিপুর থানাধীন লতাচাপলী ইউনিয়নের মম্বিপাড়া গ্রামের নতুন বাজার বেড়িবাধ এলাকায় ট্যুরিস্ট পরিচয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা অটোগাড়ি চালকদের টেনে নামিয়ে চোখ-মুখসহ এলোপাথাড়ি মারধর ও ছুরিকাঘাত করে চারটি অটোগাড়ি ছিনতাই করে নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ভিকটিমদের রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এ ঘটনায় মহিপুর থানায় পেনাল কোডের ৩৯৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়ের হলে পুলিশ সুপার পটুয়াখালীর নির্দেশনায় মহিপুর থানা ও জেলা গোয়েন্দা শাখার একাধিক দল তদন্তে মাঠে নামে। ঘটনাস্থলসহ বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মূল অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়।
পরে ২ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ পটুয়াখালী জেলা ও বরিশালের বিভিন্ন এলাকা থেকে যৌথ অভিযানে সাতজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মোঃ নাসির হাওলাদার (৩৫), মোঃ শাহীন হাওলাদার (২২), মোঃ জাকির হোসেন গাজী (৪২), মোঃ জসিম আলকুন (২৭), মোঃ জসিম হাওলাদার (৩৮), আব্দুল বাশার (৩৫) ও মোঃ রাহাত হাওলাদার (২৭)। গ্রেফতারকৃতদের বরাতে রাহাত হাওলাদারের বাড়ির আঙ্গিনা থেকে ছিনতাইকৃত চারটি অটোগাড়ি উদ্ধার করা হয়।
একজন ভিকটিম মোঃ মুন্না জানান, তিনি তার বড় ভাইয়ের বোরাক অটোগাড়ি মাঝে মাঝে চালাতেন। ৩০ নভেম্বর সকালে কুকুরাকাটা ট্রলারঘাটে একজন ট্যুরিস্ট পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি তার মোবাইল নম্বর নিয়ে পরদিন ভোরে নির্দিষ্ট স্থানে যাওয়ার কথা বলে। নির্ধারিত সময়ে পৌঁছালে কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে অটোগাড়ি ছিনতাই করে নেয়।
তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্তরা অটোগাড়ি ছিনতাই করে তা পরিবর্তন, মডিফাই ও রং পরিবর্তন করে ক্রেতা সংগ্রহ করে বিক্রি করত। তারা আন্তঃজেলা ছিনতাইচক্রের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন এলাকায় এমন অপরাধে জড়িত ছিল। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা অপরাধের বিষয়টি স্বীকার করেছে। এদের মধ্যে মোঃ নাসির হাওলাদার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল জানান, "মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং ছিনতাইচক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা যাচাইয়েরও কাজ চলছে। এই অপরাধে যারা সম্পৃক্ত তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।"