ভোলা পৌরসভার কর্মচারীরা এক মাস আগে তাদের ওপর হামলা ও তিনটি আবর্জনা ট্রাক পোড়ানোর ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার না হওয়ার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সকালে প্রেস ক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠান করেছেন। প্রতিবাদকারীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে পৌরসভার কর্মচারীরা মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। তারা স্লোগান দেন, 'সন্ত্রাসীদের ধরে দে, নইলে গাড়ি কিনে দে'। পরে প্রেস ক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে পৌরসভা কর্মচারী ফেডারেশনের উপদেষ্টা ও সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদসহ বিভিন্ন নেতা বক্তব্য রাখেন।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা জানান, ২৫ অক্টোবর ভোলা পৌরসভার নতুনবাজার এলাকায় ৩১ শতাংশ অবৈধ দখলমুক্ত জমি উদ্ধার করতে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর সময় দুলাল নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে একদল লোক পৌর কর্মচারী ও তিনটি আবর্জনা ট্রাকের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা ট্রাকগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়, যার ফলে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয় এবং একাধিক কর্মচারী আহত হন।
বিষয়টি নিয়ে পরদিন ভোলা মডেল থানায় দুলালসহ ২৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেফতার হয়নি। প্রতিবাদকারীরা অভিযোগ করেন, তারা চাইলে কর্মবিরতি করতে পারতেন, যার ফলে শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ ব্যাহত হতো। কিন্তু নাগরিক সেবার কথা বিবেচনা করে তারা তা করেনি। তবু পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে উদাসীন থাকছে।
প্রতিবাদকারীরা জানান, যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার না করা হয়, তবে তারা কঠোর আন্দোলনে নামবেন এবং পরবর্তীতে কর্মবিরতির পথও চিন্তা করেছেন।
এ বিষয়ে পৌরসভার সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, নতুনবাজার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলদারদের কারণে কিচেন মার্কেট চালু করা সম্ভব হয়নি। এতে পৌরসভা বড় ধরনের আর্থিক সংকটে পড়েছে এবং কর্মচারীদের বেতন প্রদানে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তিনি বলেন, ফুটপাট দখল করে কিছু চক্র অবৈধ কারবার চালাচ্ছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও জনস্বার্থে পরিচালিত কর্মকাণ্ডে সন্ত্রাসী হামলা বরদাশত করা হবে না এবং দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করতে হবে।
মানববন্ধন শেষে প্রতিনিধিদল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি দেন, যাতে দ্রুত আসামী গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া এ পর্যন্ত জানা যায়নি।