পটুয়াখালী সদরের নতুন বাজার এলাকার 'শ্রী গুরু গোল্ড হাউস' স্বর্ণের দোকানে ১১ নভেম্বর অভিনব পদ্ধতিতে ৬ ভরি স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় দিনাজপুর থেকে মূল হোতাসহ তিন সদস্যের একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এই সাফল্য অর্জন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ।
পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১১ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুই নারীসহ একটি চক্র দোকানে প্রবেশ করে প্রতারণার কৌশলে স্বর্ণের কানের দুলের স্টক বক্স থেকে ৬ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়। অভিযোগ অনুযায়ী, চোররা দোকানদারকে চেতনা-নাশক বস্তু ব্যবহার করে সাময়িকভাবে অচেতন করে দেয়।
দোকান মালিক লিটন মালাকার পরবর্তীতে পটুয়াখালী সদর থানায় মামলা দায়ের করলে সদর থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) যৌথভাবে শতাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামীদের শনাক্ত করে। ২৪ নভেম্বর দিনাজপুর কোতয়ালী এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মোসাম্মত রাবেয়া বেগম (৫৪), মোসাম্মত মনোয়ারা বেগম (৪৪) এবং মো. সেলিম জাবেদ (৩৮)। তারা সকলেই দিনাজপুর কোতয়ালী থানার বাসিন্দা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে বলেন, "আসামীরা দোকানে গিয়ে প্রথমে স্বর্ণের দুল বিক্রি ও চেইন কেনার কথা বলে কথোপকথনের মাধ্যমে দোকানদারকে ব্যস্ত রাখে দুই নারী। পরে পানি চাওয়ার সুযোগে দোকানদার ও কর্মচারীর নাকের কাছে চেতনা-নাশক দ্রব্য ধরিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণহীন করে ফেলে। এ সময় তারা স্টক বক্সটি ওড়নায় লুকিয়ে নিয়ে যায়। সিসিটিভি ফুটেজে এগুলোর সব তথ্য স্পষ্টভাবে দেখা যায়।"
পুলিশ চুরির সময় ব্যবহৃত ৩টি মোবাইল ফোন, আসামীদের পরিহিত বোরকা ও ওড়না এবং চুরির কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার জব্দ করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চক্রটি বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় একই ধরনের একাধিক চুরি মামলার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আসামী মো. সেলিম জাবেদ আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, চুরির ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধে জড়িত যে-কারো বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসন এই ঘটনার মাধ্যমে দোকানদারদের সতর্কতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে এবং অচেনা ব্যক্তিদের প্রতি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।