পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর চালিতাবুনিয়া গ্রামে মঙ্গলবার সকালে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে যাতে লেখা আছে 'মানসম্মান সব গেছে বাঁচা থাকা কি হবে'। পুলিশ ও পরিবারের প্রাথমিক দাবি, তারা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর চালিতাবুনিয়া গ্রাম থেকে রাকিব প্যাদা (৩০) ও তার স্ত্রী সোহাগী বেগম (২৫)-এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে স্থানীয়রা জানান, ঘটনাটি সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত দম্পতির প্রতিবেশী এক আত্মীয় ঘরে ঢুকে তাদের ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তার চিৎকারে স্বজনরা এসে লাশ নামিয়ে ফেলেন।
চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ দফাদার মোশাররফ হোসেন বলেন, "দুই জনের গলায় ফাঁসের দাগ রয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই পরিবারের লোকজন ঝুলন্ত লাশ নিচে নামিয়ে রেখেছিলেন। স্থানীয়দের কাছে শুনেছি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা ছিল। ১০-১২ দিন আগেও নাকি ঝামেলা হয়েছিল।" তিনি আরও জানান, এই দম্পতির একটি সাত বছর বয়সী সন্তান রয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ডায়েরি উদ্ধার করেছে যার দুটি পাতায় দম্পতির স্বাক্ষরিত চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুটে অনেক কথার পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে, 'মানসম্মান সব গেছে বাঁচা থাকা কি হবে'। এই বাক্যটিকে ঘিরে এলাকায় তৈরি হয়েছে রহস্য। তবে দুটি মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য উপজেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চালাচ্ছে এবং চিরকুটের বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে।
এদিকে, এলাকাবাসী জানান, রাকিব ও সোহাগীর মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে সমস্যা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। প্রতিবেশীরা বলছেন, দম্পতির মধ্যে মাঝে মাঝে তর্ক-বিতর্ক হত এবং সাম্প্রতিক সময়ে একটি ঘটনায় তাদের মধ্যে গভীর মনোমালিন্য তৈরি হয়েছিল। তবে কী কারণে এতটা চরম পদক্ষেপ নিলেন দম্পতি, তা এখনও রহস্য হিসেবেই রয়ে গেছে।