মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকে অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছেন। চীনের বাড়তে থাকা সামুদ্রিক আগ্রাসন নিয়ে বৈঠকে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মালয়েশিয়া ও অন্যান্য অংশগ্রহণকারী দেশ।
কুয়ালালামপুরে শুক্রবার শুরু হওয়া আসিয়ান প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের দুই দিনের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংসহ ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডের মন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। যদিও তার চীনের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
হেগসেথ ও রাজনাথ সিংয়ের বৈঠকে ভারতের যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনা এবং দুই দেশের নতুন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা কাঠামো নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। বৈঠকে অস্ট্রেলিয়া, চীন, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরাও উপস্থিত আছেন।
বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ খালেদ নরদিনের সঙ্গে হেগসেথের বৈঠকে দক্ষিণ চীন সাগরের সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। যৌথ বিবৃতিতে নরদিন বলেন, “বিদেশি কোস্টগার্ডের সুরক্ষায় পরিচালিত তথাকথিত হাইড্রোগ্রাফিক গবেষণার মতো ‘গ্রে-জোন’ কৌশল সার্বভৌমত্বের জন্য স্পষ্ট উসকানি ও হুমকি।”
চীন প্রায় পুরো দক্ষিণ চীন সাগর নিজেদের মানচিত্রে দাবি করে, যা ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে ওভারল্যাপ করে। এসব বিতর্কিত দ্বীপ ও সামুদ্রিক অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলছে।
বেইজিং বলছে, তাদের কোস্টগার্ড পেশাদারভাবে কাজ করছে এবং চীনা ভূখণ্ডকে অনুপ্রবেশ থেকে রক্ষা করছে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে নিজের উপস্থিতি জোরদার করে চীনের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল নিয়েছে।
গত রবিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আসিয়ান নেতাদের উদ্দেশে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র আপনাদের সঙ্গে শতভাগ আছে এবং বহু প্রজন্ম ধরে শক্তিশালী অংশীদার থাকতে চায়।” যুক্তরাষ্ট্রের ফিলিপাইনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি রয়েছে, যার আওতায় বার্ষিক বহু যৌথ মহড়া এবং ঘাঁটি ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। একই ধরনের মহড়া ও সহযোগিতা যুক্তরাষ্ট্রের থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার সঙ্গেও চলছে।
এদিকে, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের আগে ট্রাম্প জানান, তিনি মার্কিন সামরিক বাহিনীকে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার পুনরায় নির্দেশ দিয়েছেন—চীনের দ্রুত বাড়তে থাকা পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের প্রেক্ষিতে। তার প্রশাসন মিত্রদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে, যদিও এতে কিছু ক্ষেত্রে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। তবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি ট্রাম্পকে আশ্বস্ত করেছেন যে জাপান প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।