ঢাকার মিরপুরে একটি পোশাক কারখানা ও সংলগ্ন কেমিক্যাল গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তার মতে, ছাদে যাওয়ার দরজা লক করা থাকায় এবং বিষাক্ত গ্যাসে শ্বাসরোধ হয়ে অধিকাংশ প্রাণহানি ঘটে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা তালহা বিন জাশিম সাংবাদিকদের জানান, আগুন লাগার সময় শ্রমিকরা ছাদে উঠতে পারেননি, কারণ দরজাটি তালাবদ্ধ ছিল। “বেশিরভাগ ভিকটিম দগ্ধ হয়ে নয়, বিষাক্ত গ্যাসে শ্বাসরোধ হয়ে মারা গেছেন,” তিনি বলেন।
তিনি আরও জানান, “গুদামে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে এখনও ধোঁয়া বের হচ্ছে, এবং বিষাক্ত গ্যাসের কারণে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সমস্যা হচ্ছে।”
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকার চারতলা ভবনের তৃতীয় তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়, যা দ্রুত পাশের প্লাস্টিক ও রাসায়নিক ভর্তি গুদামে ছড়িয়ে পড়ে। দমকল বাহিনী কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
দুর্ঘটনায় আরও কয়েকজন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অনেক শ্রমিকের মরদেহ দগ্ধ অবস্থায় থাকায় ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে।
ঘটনার পর আশপাশের কারখানাগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ধোঁয়ার কারণে নিকটবর্তী পোশাক কারখানার অনেক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
সরকারি তদন্ত কমিটি আগুন লাগার কারণ ও নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্তে কাজ শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের দুর্ঘটনা দেশের শিল্পাঞ্চলগুলোতে নিরাপত্তা নজরদারির ঘাটতি ও অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা নতুন করে উন্মোচন করেছে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম, যেখানে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয় এবং ৪০ লাখ মানুষ কর্মরত। ২০১২ সালের তাজরীন ফ্যাশন কারখানায় আগুন ও ২০১৩ সালের রানা প্লাজা ধসের পর কিছু সংস্কার হলেও ছোট কারখানা ও গুদামগুলোর নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক।