ভারী বর্ষণের জেরে ভেনেজুয়েলার দক্ষিণাঞ্চলের এল কাল্লাও পৌরসভায় একটি স্বর্ণখনি ধসে পড়েছে; এতে অন্তত ১৪ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় দুর্যোগ-ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সংস্থা। সোমবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে কর্মকর্তারা জানান, তিনটি ভিন্ন স্থানে খনিগর্ভ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং পানি নিষ্কাশন করে উদ্ধার কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সময় রোববার রাতে হঠাৎ খনিটি ধসে পড়ে, যখন ভারী বৃষ্টিপাতে খনির গভীর গ্যালারিগুলো পানিতে প্লাবিত হয়। জাতীয় ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ দল (Sistema Nacional de Riesgo) জানায়, “প্রথম ধাপে আমরা খনির সব শ্যাফট থেকে পানি সরিয়ে নিচের স্তর শূন্য করছি; এরপরই উদ্ধার তৎপরতার পূর্ণ মূল্যায়ন করা হবে।” সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, উদ্ধারকারীরা পাম্প ও হাত-উপকরণ নিয়ে কাজ করছেন, আর স্বজনেরা খনির মুখে অপেক্ষা করছেন।
এল কাল্লাও অঞ্চলটি বোলিভার রাজ্যের অন্তর্গত; এখানে ছোট-বড় অসংখ্য অনানুষ্ঠানিক স্বর্ণখনি গড়ে উঠেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নিয়ন্ত্রণহীন খনন, অপরিকাঠামো এবং ক্রমাগত বর্ষা এই ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। ২০২২ সালে একই এলাকায় খনি ধসে ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল; তারপরও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ সীমিত রয়ে গেছে।
নিহতদের পরিচয় এখনও পূর্ণাঙ্গভাবে প্রকাশ করা হয়নি। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য পুয়ের্তো অর্ডাজ শহরের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক নয় বলে জানা গেছে।
ভেনেজুয়েলার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে “অবৈধ খনন বন্ধে কঠোর অভিযান” চালানোর কথা জানিয়েছে। তবে খনি মালিকদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তার বা মামলার খবর পাওয়া যায়নি। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, দারিদ্র্য ও মূল্যবান ধাতুর প্রলোভনে শ্রমিকরা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হন; রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধান বাড়ানো না হলে ভবিষ্যতে আরও প্রাণহানি অবশ্যম্ভাবী।