পটুয়াখালীর সদর উপজেলার লোহালিয়া ইউনিয়নের পালপাড়া বাজারে দুই পক্ষের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে গিয়ে পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে মোট সাতজন আহত হন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগান থেকে দুটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে এবং ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
বুধবার রাতে লোহালিয়া ইউনিয়নের পালপাড়া বাজার এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সোহাগ মাঝি (পিতা রফিক মাঝি, সাং পাজাখালি) ও মফিজুল মৃধা (পিতা সুলায়মান মৃধা, সাং পাজাখালি) — এই দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যার দিকে সোহাগ মাঝি প্রায় ২০-২৫ জন অনুসারী নিয়ে পালপাড়া বাজারে প্রবেশ করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্থানীয়রা জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন দিলে পটুয়াখালী সদর থানা থেকে বিট অফিসার এসআই রাসেল, এএসআই জহিরুল ইসলাম, এএসআই আব্দুর রহমান এবং মোবাইল-১১ টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
পুলিশের উপস্থিতি দেখেই সোহাগ মাঝির অনুসারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এতে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর হয় এবং এসআই জহিরুল ইসলাম, এএসআই আব্দুর রহমান, কনস্টেবল মুহিবুল্লাহ ও ড্রাইভার কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম আহত হন।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগান থেকে দুই রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এরপর সোহাগ মাঝির অনুসারীরা প্রতিপক্ষ মফিজুল মৃধার ওপর দা, লাঠি ও সুরকি দিয়ে হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর জখম করে।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) অপু চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সাজেদুল ইসলাম সজল এবং সদর থানার ওসি ইমতিয়াজ আহমেদ অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আহতদের মধ্যে মফিজুল মৃধাসহ কয়েকজনকে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত পুলিশ সদস্যদের স্পিডবোটে করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গুরুতর আহত মফিজুল মৃধাকে পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে লোহালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামাল মৃধা জানান।
ঘটনার পর এলাকাজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সাজেদুল ইসলাম সজল বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে। তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।”