বরগুনার তালতলীতে পরকীয়া সম্পর্কে বাধা দেয়ায় স্বামীকে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে হত্যার অভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত স্ত্রী আকলিমা বেগম এবং তার কথিত প্রেমিক মোহাম্মদ নেছারকে র্যাবের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে এই গ্রেফতার সম্পন্ন হয়, যা ২০২৪ সালের আগস্টে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের সাথে যুক্ত।
র্যাব-৮, সিপিসি-১, পটুয়াখালী এবং র্যাব-১১, সদর কোম্পানি, নারায়ণগঞ্জের একটি যৌথ অভিযানিক দল গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ৯টা ১০ মিনিটে বরগুনার তালতলীতে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ নেছারকে (৩৭) গ্রেফতার করে। নেছার পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানার তারিকাটা চাকামাইয়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রধান অভিযুক্ত আকলিমা বেগমকে (৩২) নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন মিজমিজি রহমতগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। আকলিমা বরগুনার তালতলী থানার কচুপাত্রা গ্রামের মৃত আব্দুল কাদের হাওলাদারের মেয়ে।
ঘটনার বিবরণ অনুসারে, বরগুনার তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা গ্রামের নাজিম উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে মাসুম বিল্লাহ প্রায় তিন বছর আগে হুলাটানা গ্রামের কাদের হাওলাদারের মেয়ে আকলিমা বেগমকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। গত ছয় মাস ধরে আকলিমা তার স্বামীর কাছে ৩৬ শতাংশ জমি দাবি করে আসছিলেন, কিন্তু মাসুম তা দিতে রাজি হননি। গত ২০ আগস্ট মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে আকলিমা তার স্বামীকে বাড়িতে ডেকে নেন এবং সহযোগীদের সাথে মিলে সরবতের সাথে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে দেন। এরপর তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
মাসুম বিল্লাহ তখন শারিরখালী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ সোহেলকে ফোন করে বলেন, “আমাকে বাঁচাও। আকলিমা ও তার লোকজন আমাকে সরবতের সাথে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে দিয়েছে।” খবর পেয়ে সোহেলসহ তার স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান তার অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন রাত ২টা ১০ মিনিটে মাসুম বিল্লাহ মারা যান।
পরের দিন ২১ আগস্ট বুধবার রাতে নিহতের বড় ভাই গোলাম কবির বাদী হয়ে আকলিমা বেগমকে প্রধান আসামি করে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তালতলী থানার নম্বর ১৭, তারিখ ২২ আগস্ট ২০২৪, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড।
অভিযুক্তদের পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এবং বরগুনার তালতলী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।