যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে গাজা উপত্যকায় ‘চূড়ান্ত ও স্থায়ী শান্তি’র একটি প্রস্তাব তুলে ধরবেন; ঠিক একই সময়ে ইউরোপের একাধিক দেশ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, যা ওয়াশিঙ্টন ও তেল আবিব উভয়ই প্রত্যাখ্যান করেছে।
সম্প্রতি নরওয়ে, স্পেন ও আয়ারল্যান্ড পার্লামেন্ট ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অনুমোদন করে, যাতে করে ইসরায়েল-বিরোধী বৈশ্বিক চাপ বাড়ে। এর প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প প্রশাসন ‘একক-স্টেজ’ ফর্মুলার কথা ভাবছে—অর্থাৎ গাজা ও পশ্চিমতীরে ‘সীমিত স্বায়ত্তশাসন’ দিয়ে প্রথমে যুদ্ধবিরতি, পরে আঞ্চলিক দেশগুলোর তত্ত্বাবধানে পুনর্গঠন এবং তৃতীয় পর্যায়ে ‘ঐচ্ছিক রাষ্ট্রীয় মর্যাদা’—যা ইসরায়েলের ‘নিরাপত্তা ছত্র’ হাতে রাখার শর্তে হবে।
বৈঠকের আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা হামাসকে পরাজিত করেছি, কিন্তু স্থায়ী সমাধান না হলে ১০ বছর পর আবার একই সংকট। প্রস্তাবে আর্থিক পুনর্গঠনে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের ৫০ বিলিয়ন ডলার তহবিলের কথা রয়েছে, বিনিময়ে ইসরায়েল গাজায় সামরিক উপস্থিতি কমাবে।”
নেতানিয়াহু ক্যাবিনেটের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) রয়টার্সকে জানান, “প্রধানমন্ত্রী যেকোনো চুক্তির আগে হামাসের ‘পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ’ ও ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ‘বিধ্বস্ত গাজায় ফিরে যাওয়া’ শর্ত আরোপ করবেন।” অন্যদিকে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রধান আল-উলাইকি প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “আমরা পূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা ছাড়া কোনো অন্তর্বর্তী পরিকল্পনা মানব না।”
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের প্রস্তাব ২০২০ সালের ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’র মতোই ‘ইসরায়েল-অনুকূল’ হতে পারে, যা ফিলিস্তিনি জনগণের ভোট ছাড়া বাস্তবায়ন কঠিন। তুরস্ক ও মিশর ইতোমধ্যে জানিয়েছে, তারা যেকোনো সমাধানে ‘আরব লীগের ঐকমত্য’ ছাড়া অংশ নেবে না।
তাই হোয়াইট হাউসের বৈঠকে ট্রাম্প-নেতানিয়াহু যতই সমাধানের বার্তা দেন না কেন, ইউরোপীয় স্বীকৃতি-ঢেউ ও আরব বিশ্বের অনড় অবস্থানের কারণে গাজায় ‘চূড়ান্ত শান্তি’ এখনও দূরবর্তী বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।