উত্তর-মধ্য ভিয়েতনামে টাইফুন বুয়ালয় আঘাত হেনেছে; ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বর্ষণে গ্রামাঞ্চল প্লাবিত, ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত দুজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে, আর উপকূলে ফিশিং ট্রলার ডুবে ১৭ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
ভিয়েতনামের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা জানায়, রবিবার গভীর রাতে (স্থানীয় সময় ২টা ৪০ মিনিট) আনাম প্রদেশের তানহোয়া জেলায় বুয়ালয় স্থলভাগে আঘাত হানে; এক ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ ছিল ১৩৫ কিলোমিটার, দমকা অংশে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠেছে। সোমবার ভোর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে—যা স্বাভাবিকের দ্বিগুণ।
দেশট্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের (সিডিডিএমএ) প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—
- আনাম, কুয়াং বিন ও থানহোয়া জেলায় ৮০০টির বেশি ঘর ছাদ উড়ে গেছে, ৩টি স্কুল ও ১টি হাসপাতাল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত।
- ১২ কিলোমিটার সড়ক ভেঙে পড়ায় হাইওয়ে ১এ বন্ধ; ৩৫ খামারে জলাবদ্ধতায় প্রায় ৫০০ হেক্টর ধান নষ্ট হয়েছে।
- ১১টি ফিশিং ট্রলার উপকূলে ডুবে গেছে; উদ্ধারকারী দল ১৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করলেও ১৭ জনের খোঁজ মিলছে না।
নিখোঁজ জেলেদের একজনের স্বজন নগুয়েন থি হুয়ং (৪২) রয়টার্সকে বলেন, “আমার ভাইয়ের ফোন রাত দুইটার পর থেকে বন্ধ; কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, বাতাসের তীব্রতায় উদ্ধার অভিযান বিলম্বিত হচ্ছে।” কোস্ট গার্ডের মুখপাত্র ফাম থি থান হুয়ে জানান, ৬টি জাহাজ ও ২টি হেলিকপ্টার চালিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চলছে; তবে ৩-৪ মিটার উচ্চতার ঢেউ ও ঘন কুয়াশা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন এক জরুরি বৈঠকে সেনাবাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন ও রেডক্রসকে উদ্ধার-ত্রাণ কাজে সমন্বয়ের নির্দেশ দেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ২,০০০ টন চাল ও ৫০০ টি তাঁবু সরবরাহের ঘোষণা দেন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কমিটি জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আরও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়ছে; ফলে ১৫,০০০ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।