অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ রবিবার জানিয়েছেন যে, স্কটল্যান্ডে কিং চার্লসের সাথে তার সাক্ষাতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্রিটেনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে রিপাবলিকে পরিণত করার বিষয়ে কোনো আলোচনা করেননি। এই সাক্ষাতটি শনিবার স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজের সাথে কিং চার্লসের এই একান্ত সাক্ষাতটি স্কটল্যান্ডের স্কটিশ হাইল্যান্ডসে অবস্থিত রাজপ্রাসাদ বালমোরালে হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের এক সাক্ষাৎকারে অ্যালবানিজকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, তিনি কি রিপাবলিক হওয়ার জন্য রেফারেন্ডামের পরিকল্পনা উত্থাপন করেছেন। উত্তরে তিনি বলেন, “না। এবং আমি স্পষ্ট করে বলেছি যে, আমি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন একটি রেফারেন্ডাম অনুষ্ঠিত করতে চেয়েছিলাম, এবং আমরা তা করেছি।”
অ্যালবানিজ আরও যোগ করেন, “আমরা জীবনযাত্রার খরচ এবং মানুষের জীবনে বাস্তবিক ও ব্যবহারিক পরিবর্তন আনার উপর মনোনিবেশ করছি।” এই মন্তব্যটি তার সরকারের বর্তমান অগ্রাধিকারগুলোকে তুলে ধরে, যা অর্থনৈতিক বিষয়গুলোর উপর কেন্দ্রীভূত।
অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ যুক্তরাজ্যের বাইরে কমনওয়েলথের আরও ১২টি দেশের মতো, কিং চার্লসকে তাদের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মেনে চলে, যদিও এই ভূমিকা মূলত আনুষ্ঠানিক। অস্ট্রেলিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে দূরবর্তী রাজতন্ত্র বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। ১৯৯৯ সালে রিপাবলিক হওয়ার বিষয়ে একটি রেফারেন্ডাম অনুষ্ঠিত হয়, যাতে ৫৫ শতাংশ ভোটার বিরোধিতা করে এটি প্রত্যাখ্যান করেন।
অ্যালবানিজ নিজেকে জীবনভর রিপাবলিকপন্থী হিসেবে বর্ণনা করেন এবং কিং চার্লসের প্রতি আনুগত্যের শপথ নিয়েছেন। তার নেতৃত্বাধীন সেন্টার-লেফট লেবর পার্টি ২০২৩ সালের অক্টোবরে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি রেফারেন্ডামের উদ্যোগ নেয়, যা ব্যাপকভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়। এই ঘটনার পর অ্যালবানিজ একটি রেফারেন্ডাম অনুষ্ঠানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, কিন্তু বর্তমানে অন্যান্য বিষয়ে মনোনিবেশ করছেন।
কিং চার্লস অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করা একমাত্র ব্রিটিশ রাজা এবং গত বছরের অক্টোবরে তিনি অস্ট্রেলিয়া সফর করেন, যা ১৩ বছরের মধ্যে প্রথম রাজকীয় সফর। এই সাক্ষাতের একদিন আগে অ্যালবানিজ লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সাথে সাক্ষাত করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সাথে অকুস নিউক্লিয়ার সাবমেরিন চুক্তির প্রতি আস্থা প্রকাশ করেন।
এই ঘটনা অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক ভবিষ্যত নিয়ে চলমান আলোচনাকে তুলে ধরে, যদিও বর্তমান সরকারের ফোকাস অন্যত্র।