ভোলার সাগরপাড়ে মাছ ধরতে গিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করার দায়ে ১৯ জেলেকে আটক করেছে ভারতের কোস্টাল থানার নৌ-পুলিশ। একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যকে হারিয়ে দিশেহারা পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছেন দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু নোমান মো. ছফিউল্লাহ—খাদ্য, আর্থিক সহায়তা ও ফিরিয়ে আনার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে গত সপ্তাহে, যখন ঘূর্ণিঝড়ের পর মাছের ঝাঁক বেশি পাওয়ার আশায় জেলেরা গভীর সাগরে যান। ভুলবশত ভারতের জলসীমায় প্রবেশ করলে তাদের আটক করে নৌ-পুলিশ। খবর ছড়িয়ে পড়তেই দুশ্চিন্তা নেমে আসে ভোলার দিঘলদী, চরফ্যাশন ও তজুমদ্দিনের ১৯ পরিবারে।
সাবেক চেয়ারম্যান আবু নোমান মো. ছফিউল্লাহ স্থানীয় কমিউনিটি ক্লাবকে কেন্দ্র করে ত্রাণ তহবিল গঠন করেন। প্রতিটি আটক জেলের পরিবারকে ১৫ কেজি চাল, ডাল, তেল ও নগদ ৩ হাজার টাকা প্রদান করেন তিনি। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ হাইকমিশন, কলকাতায় যোগাযোগ করে কূটনৈতিক নোট পাঠানোর উদ্যোগ নেন। “মানুষের দুঃখে পাশে দাঁড়ানোই আমার দায়িত্ব,” বলেন নোমান চেয়ারম্যান।
স্থানীয় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মো. আলাউদ্দিন জানান, গত পাঁচ বছরে অন্তত ছয়বার বড় আকারের জেলে-আটকের ঘটনা ঘটেছে; প্রতিবারই পরিবারগুলোকে দেনা-দরবার করে টাকা জোগাড় করে জামিনের খরচ চালাতে হয়েছে। “এবার নোমান চেয়ারম্যানের সহায়তায় কিছুটা স্বস্তি মিলেছে,” বলেন তিনি।
আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী রেহানা বেগম মনে করেন, দীর্ঘমেয়াদে সীমান্তবর্তী উপকূলীয় গ্রামগুলোতে বিকল্প কর্মসংস্থান, জিপিএস-ভিত্তিক ট্রলার ও আবহাওয়া সতর্কীকরণ প্রযুক্তি বাধ্যতামূলক করতে হবে। “নইলে প্রতি ঋতুতেই একই দুঃখজনক সংবাদ শুনতে হবে,” যোগ করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিম জানান, জেলেদের ফিরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। “আমরা আশাবাদী, শিগগিরই তারা দেশে ফিরবেন,” বলেন তিনি।