সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২৬৮৮ ডলারের কাছাকাছি অটুট থেকে গত সপ্তাহের রেকর্ড উচ্চতায় স্থির, যেহেতু বিনিয়োগকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বক্তব্য এবং সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতির তথ্যের দিকে নজর রাখছেন। সুদের হার কম থাকা ও ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা—এই দুই কারণেই দরিদ্র আর্থিক সম্পদের চেয়ে নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণের আকর্ষণ বাড়ছে।
স্পট মার্কেটে সোমবার সকালে (জিএমটি ০৬:৪০) এক আউন্স স্বর্ণ ২৬৮৩-৮৮ ডলারের মধ্যে লেনদেন হয়, যা ১৯ সেপ্টেম্বরের সর্বোচ্চ ২৬৯০ ডলারের চেয়ে সামান্য নিচে। একই সময়ে ডিসেম্বর-ডেলিভারি স্বর্ণ ফিউচার কমেক্সে ২৬৯৫ ডলারে প্রতিহত হয়।
ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ার জেরোম পাওয়েল মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে ‘ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর বিজনেস ইকোনমিকস’-এর সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন; বাজার তার মন্তব্য থেকে নভেম্বর বা ডিসেম্বরে আরও ২৫-বেসিস-পয়েন্ট হার-কমানোর ইঙ্গিত খুঁজবে। সিএমই-র ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, বর্তমানে ৭৮ শতাংশ সম্ভাবনায় নভেম্বরে হার কমছে।
কম সুদের পরিবেশ স্বর্ণের জন্য অনুকূল, কারণ স্বর্ণ সুদ দেয় না; অতএব সুদের হার কম হলে ধাতুটির সুযোগ-খরচ কমে যায়। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য দ্বন্দ্বও নিরাপদ সম্পদের চাহিদা বাড়িয়ে তুলছে।
ভারতের বুলিয়ন ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র সুরেন্দ্র জৈন বলেন, “রিটেইল বাজারে বিবাহের মৌসুম শুরু হওয়ায় স্বর্ণের আমদানি প্রিমিয়াম ৩ ডলার/আউন্সে উঠেছে; চীনেও ‘গোল্ডেন উইক’-এর আগে চাহিদা বেড়েছে।”
তবে শক্ত ডলার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। ডলার ইনডেক্স ১০১.৪ পয়েন্টে অবস্থান করায় স্বর্ণ অন্যান্য মুদ্রার ধারকদের কাছে কিছুটা ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে।
টেকনিক্যাল বিশ্লেষকদের মতে, ২৭০০ ডলার আউন্স মানসিক সীমা অতিক্রম করতে পারলে পরবর্তী প্রতিরোধ ২৭৫০ ডলার; অন্যদিকে ২৬৫০ ডলার সমর্থন ভেঙে গেলে প্রফিট-বুকিং ২৬০০ ডলারে নামিয়ে আনতে পারে।
উপসংহারে এএনজেড রিসার্চ-এর কমোডিটি বিশ্লেষক ড্যানিয়েল হেইন্স বলেন, “স্বর্ণের মূল চালিকা এখনো ম্যাক্রো-ইকোনমিক অনিশ্চয়তা; ফেড যত দেরি করে হার কমাবে, ধাতুটির দাম ততই উপরের দিকে থাকবে।”