যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের উভয় দলের (বাইপার্টিসান) সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রবিবার চীন সফরে পৌঁছেছে; ২০১৯-এর পর এই প্রথম কোনো মার্কিন আইনপ্রণেতা দল বেইজিং সফর করছে। সফরকালে তারা চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং-এর সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে উত্তেজনা কমানো ও বাণিজ্য-নিরাপত্তা সহযোগিতা পুনরুদ্ধারের পথ খুঁজবেন।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জন কার্টিস ও ডেমোক্র্যাট রাজা কৃষ্ণমূর্তি। চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়েছে, বৈঠকে উভয় পক্ষ “মানবিক বিনিময়, জলবায়ু সহযোগিতা এবং ফেন্টানিল নিয়ন্ত্রণ” নিয়ে কাজাঙ্ক্ষাপূর্বক আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বৈঠকে বলেন, “দুই দেশের আইনপ্রণেতাদের সরাসরি যোগাযোগই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি।” যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কংগ্রেসম্যান কার্টিস উল্লেখ করেন, “আমরা প্রতিযোগিতা এড়িয়ে সহযোগিতার ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে চাই, যাতে কোনো ভুল বার্তায় উত্তেজনা না বাড়ে।”
২০২৪ সালের নভেম্বরে বাইডেন-শি জিনপিং বৈঠকের পর উভয় দেশ ‘ক্লাইমেট ডায়ালগ’ ও ‘ফেন্টানিল কোঅর্ডিনেশন গ্রুপ’ পুনরায় চালু করলেও দক্ষিণ চীন সাগর, তাইওয়ান ও প্রযুক্তি রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে দ্বন্দ্ব কমেনি। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র ৩১০ বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক বহাল রাখে; পাল্টা চীনও র্যার-আর্থ খনিজ রপ্তানি সীমিত করে।
বেইজিং-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ঝাও মিং বলেন, “এই সফর প্রতীকী হলেও গুরুত্বপূর্ণ; কারণ দুই পক্ষই এখন ‘ডিকপ্লিং’-এর চেয়ে ‘ম্যানেজড কম্পিটিশন’-এর পথ খুঁজছে।”
ওয়াশিংটনে কংগ্রেসের চীন-বিষয়ক ‘হাউস সিলেক্ট কমিটি’র চেয়ারম্যান জন মুলিনার সতর্ক করে বলেছেন, “আলোচনা হবে কঠোর বাস্তবতা নিয়ে; আমরা চীনকে কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই দেখছি।” তবে সফররত প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জানান, তারা মানবিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুতে ‘আলোচনা-বিচ্ছিন্ন না রাখার’ বার্তা দেবেন।
উপসংহারে কংগ্রেসম্যান কৃষ্ণমূর্তি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ফিরে গিয়ে ক্যাপিটল হিলে যে সুপারিশ করব, তা হলো—খোলা চ্যানেল রাখাই উভয় দেশের জনগণের স্বার্থে সবচেয়ে সস্তা কৌশলগত বীমা।”