যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনায় ইতিবাচক ইঙ্গিত এবং ফেডারেল রিজার্ভের সম্ভাব্য সুদ-হ্রাসের আশায় মঙ্গলবার ভারতীয় শেয়ারবাজারে উল্লেখযোগ্য উত্থান হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি-আকর্ষণ বেড়ে যাওয়ায় সেনসেক্স ও নিফটি উভয় সূচকই এক সপ্তাহের উচ্চতায় পৌঁছেছে; এশিয়ার মধ্যে ভারত শীর্ষ পারফরম্যান্সকারী বাজারগুলোর একটি।
বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সেনসেক্স ০.৯% বেড়ে ৮২,৭৪০ পয়েন্টে এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিফটি ০.৮% চড়ে ২৫,১৮০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে—গত সাত কার্যদিবসের সর্বোচ্চ। MSCI India সূচক ১.১% উত্থানে ৮৫৫ পয়েন্ট—এক মাসের শিখর। বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা (FPI) নিট ৩৭৫ মিলিয়ন ডলার কিনেছে—চার সপ্তাহের সর্বোচ্চ নিট ক্রয়। ব্লুমবার্গ ডেটা অনুযায়ী, আগস্টে FPI নিট বিক্রয় ছিল ১.২ বিলিয়ন ডলার; সেপ্টেম্বরে তা উল্টে গেছে।
চালিকা শক্তি দুটি—
১. বাণিজ্য আলোচনা: মাদ্রিদে চলমান US-India Trade Initiative-এর পঞ্চম রাউন্ডে যুক্তরাষ্ট্র ২০২৬ সালের মধ্যে ভারতীয় অটো parts, টেক্সটাইল ও বায়ো-ফার্মায় ৮% অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
২. ফেড আশা: বাজার ৯৫% নিশ্চিত ১৮ সেপ্টেম্বর ২৫ bps কাটা; কিছু বিশ্লেষক ৫০ bps-এর সম্ভাবনাও দেখছেন, যা বিদেশি তহবিলের প্রবাহ বাড়ায়।
বিশ্লেষকদের মন্তব্য: “ভারত এখন বিশ্ববাজারে ‘গ্রোথ আইল্যান্ড’; ফেড সাইকেলে তরলতা বাড়লে ইমার্জিং মার্কেটে ভারত প্রথম ঠিকানা,” বলেন মোতিলাল ওসওয়াল-এর হেড অফ রিসার্চ গৌতাম ডুগগর। ICICI প্রুডেন্সিয়াল-এর সিনিয়র ফান্ড ম্যানেজার রাজেশ ভাটিয়া যোগ করেন, “ব্যাংক, আইটি ও কনজিউমার ডিসক্রিশনারি—এই তিন খাতে বিদেশি ওভারওয়েট দ্রুত বাড়ছে”।
খাতভিত্তিক পারফরম্যান্স:
- ব্যাংকিং: HDFC Bank ২.১%, ICICI Bank ১.৮% উত্থান—বন্ড ইয়েল্ড কমায় NIM প্রস্পেক্ট উন্নত।
- আইটি: ইনফোসিস ২.৪%, টিসিএস ১.৯%—ফেড কাট outlook-এ USD রেভিনিউ ট্রান্সলেশন বেনিফিট।
- অটো: মারুতি ১.৬%, টাটা মোটরস ১.৪%—US-India auto parts শুল্ক প্রত্যাহার আশা।
মুদ্রা ও বন্ড বাজারে সুবিধা: রুপি ০.২% শক্তি পেয়ে ৮৩.৪০/ডলার—এক সপ্তাহের শিখর। ১০-বছরের সরকারি বন্ড ইয়েল্ড ৭.১৮% থেকে ৭.১২%-এ নেমে এসেছে—বিদেশি ক্রয়চাপ। বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগান ১০-বছরের yield ৭.০৫%-এ পৌঁছানোর পূর্বাভাস দিয়েছে, যদি FPI inflow মাস শেষে ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়।
ঝুঁকি রয়েছে। RBI গভর্নর শক্তিকান্ত দাস সোমবার সতর্ভ করে দেন, “বৈশ্বিক তরলতা ঢলে রুপি অতিরিক্ত শক্তি পেলে রপ্তানিকারকদের competitiveness ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে”। এছাড়া ক্রুড অয়েল দাম যদি ৮০ ডলার/ব্যারেল ছাড়ায়, কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ঘাটতি ১.৮% থেকে ২.২%-এ উঠে যেতে পারে। তবে বিনিয়োগকারীদের ধারণা, ফেড সাইকেল শুরু হলে RBI-ও ২৫-৫০ bps সুদ কমাতে পারে, যা ইকুইটি ও বন্ড—দুই বাজারেই প্রবাহ বাড়াবে।