প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ৪, ২০২৫, ৮:৩৩ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫, ১:২৫ পি.এম
রুশ আক্রমণে জাপোরিঝিয়ায় নিহত ১, আহত ১৩; আবাসিক ভবন ধ্বংস, আগুন ছড়িয়ে পড়ে
ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর জাপোরিঝিয়ায় মঙ্গলবার ভোরে রুশ বাহিনীর বড় আকারের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় এক ৪১ বছর বয়সী পুরুষ নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। আক্রমণে একাধিক আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অন্তত চারটি স্থানে আগুন ধরে যায় বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় জরুরি সেবা সংস্থা।
স্থানীয় সময় ভোর ৫টার দিকে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও “শাহেদ” ড্রোন ছুড়ে অভিযান চালানো হয়। জাপোরিঝিয়ার গভর্নর ইভান ফেদরোভ টেলিগ্রামে জানান, “পাঁচতলা একটি বাসিন্দা ভবনের ছাদ সম্পূর্ণ ধসে পড়ে; পাশের দোকানঘর ও গাড়ি পুড়ে গেছে”। উদ্ধারকারীরা ১১ জনকে ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত উদ্ধার করে; আহতদের মধ্যে দুই শিশুকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়, তাদের অবস্থা স্থিতিশীল।
ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ড জানায়, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছয়টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ১২টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে; তবে কয়েকটি প্রতিরক্ষা এড়িয়ে শহরতলির আবাসিক এলাকায় আঘাত হানে। হামলার পর জরুরি বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়; দমকল বাহিনী তিন ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দাবি করে, “ইউক্রেনীয় সামরিক অবকাঠামো ও গোয়েন্দা ঘাঁটির ওপর নির্ভুল আঘাত করা হয়েছে”; তবে আবাসিক ভবন ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়নি। মস্কো আরও জানায়, অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল “ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষমতা নষ্ট করা”।
জাতিসংঘের ইউক্রেন মানবাধিকার মনিটরিং মিশন জানিয়েছে, গত এক মাসে জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে বেসামরিক হত্যার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে; আহত হয়েছে ৮৯ জন। মিশন প্রধান ড্যানিয়েল বেল বলেন, “আবাসিক এলাকায় আক্রমণ অব্যাহত থাকা গভীর উদ্বেগজনক; আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী এটি অগ্রহণযোগ্য”।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তিহোর জি বলেন, “এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল নাগরিকদের মনোবল ভাঙা; আমরা পশ্চিমা মিত্রদের অতিরিক্ত বিমান প্রতিরক্ষা সিস্টেম পাঠানোর আহ্বান জানাচ্ছি”। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে রুশ আক্রমণের নিন্দা করে বলে, “বেসামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল”।
স্থানীয় বাসিন্দা লুডমিলা (৫৪) বলেন, “আমরা ঘুম থেকে উঠে শুনি বিস্ফোরণ; ছাদ ধসে পড়ে, প্রতিবেশী চিৎকার করছে। আমরা আবারও আতঙ্কে দিন শুরু করলাম”। কর্তৃপক্ষ তিনটি অস্থায়ী আশ্রয় শিবির খুলেছে; বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ আংশিকভাবে বন্ধ রয়েছে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত