সুইস ঘড়ি নির্মাতা সোয়াচ গ্রুপের প্রধান নির্বাহী নিক হায়েক জানিয়েছেন, গত মাসে ট্রাম্প প্রশাসনের ৩৯% আমদানি শুল্কের প্রভাব মেটাতে আগামী সপ্তাহ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সব ব্র্যান্ডের ঘড়ির দাম ৫ থেকে ১৫% বাড়ানো হবে।
রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হায়েক বলেন, “শুল্ক আমাদের উৎপাদন খরচে সরাসরি যোগ হয়েছে; এর পুরোটা গ্রাহকের ওপর চাপানো না হলেও বড় অংশই দামে প্রতিফলিত হবে।” তিনি আরও জানান, এতে Omega-র মতো প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডে ১০–১৫% দাম বাড়বে, Swatch ও Tissot-এর মতো মধ্যম সারির মডেলে বাড়বে ৫–৭%। কোম্পানির হিসাবে, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া প্রতি ১০টি সোয়াচ গ্রুপ ঘড়ির ৭টিই এখন নতুন শুল্কের আওতায় পড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৪ সালে সোয়াচ গ্রুপের বিক্রি ছিল ১.১ বিলিয়ন সুইস ফ্রা, যা মোট রাজস্যের প্রায় ১৪%। হায়েক সতর্ক করে দেন, “দাম বাড়লে বিক্রি ৮–১০% কমতে পারে; তবুও মুনাফা ধরে রাখতে দাম সমন্বয় অপরিহার্য।” কোম্পানিটি শুল্ক এড়াতে কিছু মডেল সরাসরি মেক্সিকো ও থাইল্যান্ডের কারখানা থেকে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে, কিন্তু প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডগুলোর জন্য “সুইস মেইড” ট্যাগ রাখা বাধ্যতামূলক বলে পুরোপুরি সরে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ট্যারিফ প্রসঙ্গে হায়েক সমালোচনা করে বলেন, “৩৯% শুল্ক আমাদের মতো বিলাসপণ্য খাতকে কেবল শাস্তি দিচ্ছে, বৈশ্বিক বাণিজ্যে এর কোনো যৌক্তিক ভিত্তি নেই।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, আসন্ন মার্কিন-ইউরোপীয় বাণিজ্য আলোচনায় শুল্ক হ্রাস হবে; তা না হলে ২০২৬ সালে আরও এক দফা দাম বাড়াতে হবে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সোয়াচের পদক্ষেপে ঘড়ি বাজারে দাম বাড়ার ঢেউ লাগতে পারে। Rolex বা Patek Philippe-এর মতো স্বতন্ত্র ব্র্যান্ডগুলো এখন পর্যন্ত শুল্কবৃদ্ধির ঘোষণা না দিলেও ছুটির মৌসুমে সরবরাহ সংকট ও চাহিদা ধাক্কা খেতে পারে। কনজিউমার রিসার্চ ফার্ম NPD-এর তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে গড় ঘড়ির দাম গত এক বছরে ইতিমধ্যেই ১১% বেড়েছে; নতুন সমন্বয়ে তা আরও ৬–৮% যেতে পারে।