ভারতের উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহর জেলায় একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় একটি কন্টেইনার ট্রাক ভক্তদের বহনকারী একটি ট্রাক্টর-ট্রলির সঙ্গে সংঘর্ষে আটজন নিহত এবং ৪৩ জন আহত হয়েছে। রবিবার (২৪ আগস্ট ২০২৫) মধ্যরাতে জাতীয় মহাসড়ক ৩৪-এ ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় জরুরি সেবা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে।
দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বুলন্দশহর-আলিগড় সীমান্তের কাছে আরনিয়া বাইপাসের নিকট, যখন একটি দ্রুতগামী কন্টেইনার ট্রাক পিছন থেকে একটি ট্রাক্টর-ট্রলির সঙ্গে সংঘর্ষ করে, ফলে ট্রাক্টরটি উল্টে যায়। ট্রাক্টরটিতে প্রায় ৬০-৬১ জন ভক্ত কাসগঞ্জ জেলার রাফাতপুর গ্রাম থেকে রাজস্থানের গোগামেদিতে জাহারপীর (গোগাজি) মেলায় যাচ্ছিলেন। নিহতদের মধ্যে দুইজন নারী এবং একটি শিশু রয়েছে।
বুলন্দশহরের সিনিয়র সুপারিন্টেনডেন্ট অফ পুলিশ (গ্রামীণ) দিনেশ কুমার সিং জানান, “দুর্ঘটনাটি রাত প্রায় ২:১৫ মিনিটে ঘটে। ট্রাক্টরটি উল্টে যাওয়ায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন। আটজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৪৩ জন বর্তমানে চিকিৎসাধীন। তিনজনের অবস্থা গুরুতর, তারা ভেন্টিলেটরে রয়েছেন।” আহতদের দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, এবং নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। ট্রাকটি পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, তবে চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ট্রাকের উচ্চ গতি এই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হতে পারে। ঘটনার পর পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা, যার মধ্যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং এসএসপি ছিলেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ক্রেনের সাহায্যে ট্রাক্টরটি সরিয়ে ট্রাফিক স্বাভাবিক করা হয়।
এই ঘটনায় উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শোক প্রকাশ করেছেন এবং আহতদের সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি টুইটারে বলেন, “এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।” পুলিশ এই ঘটনার পূর্ণ তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে এবং চালকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
কাসগঞ্জ এবং আশপাশের এলাকায় এই দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকে হাসপাতালে ছুটে গেছেন আহতদের সহায়তার জন্য। স্থানীয়রা এই মহাসড়কে ট্রাকের উচ্চ গতি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এই দুর্ঘটনা ভারতের মহাসড়কগুলোতে নিরাপত্তা ইস্যু এবং ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলার গুরুত্বের বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কঠোর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা না হলে এ ধরনের দুর্ঘটনা অব্যাহত থাকবে।