পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. রুহুল আমিন শিকদার বিচারককে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন। এ ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতি তার প্রাথমিক সদস্যপদ স্থগিত করেছে এবং সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছে।
বুধবার সকালে সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামির জামিনের জন্য বিচারক নীলুফার শিরিনকে ৫০ হাজার টাকা খামে পাঠানো হয়, যা পিপি রুহুল আমিন শিকদারের দ্বারা পাঠানো বলে অভিযোগ উঠেছে। বিচারক নীলুফার শিরিন নিজের উপর এই আচরণকে অপমানজনক মনে করে বার কাউন্সিলের সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, এর আগেও একই মামলার অন্য আসামির জামিন নেওয়ার জন্য রুহুল আমিন তাকে হোয়াটসঅ্যাপে হেনস্থা করেছিলেন।
অভিযোগে পিপি রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলায় আসামি পক্ষের হয়ে তদবিরের কথাও উল্লেখ রয়েছে, এবং আদালতের আদেশ প্রত্যাশামতো না হলে সাংবাদিকদের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগও রয়েছে। 'জুলাই শহীদ কন্যা ধর্ষণ মামলা’তেও তিনি আসামি পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার পর বৃহস্পতিবার জেলা আইনজীবী সমিতি জরুরি সভা আহ্বান করে এবং সর্বসম্মতি থেকে রুহুল আমিনের সদস্যপদ স্থগিত করে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে। এছাড়াও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসক, দুদক, আইন মন্ত্রণালয় ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে।
পিপি রুহুল আমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি এবং ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বলেন, “আমাদের ঐতিহ্যবাহী সমিতি কখনো ঘুষ, দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতি প্রশ্রয় দেয় না। আমরা অভিযোগ পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।”
জামায়াতপন্থী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত রুহুল আমিন ২০২৫ সালে জামায়াতে ইসলামী প্যানেল থেকে জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি এবিএম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘অভিযোগ সত্য হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’