মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের আসন্ন সুদের হার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত এবং মার্কিন শুল্ক আরোপের সময়সীমার কারণে বৈশ্বিক শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এছাড়া, গুরুত্বপূর্ণ কর্পোরেট আয়ের রিপোর্ট এবং ভূ-রাজনৈতিক ঘটনাবলী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে।
মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠক, যেখানে সুদের হার ৪.২৫%-৪.৫০% পরিসরে অপরিবর্তিত রাখার প্রত্যাশা করা হচ্ছে, বাজারের মনোযোগ কেড়েছে। একই সঙ্গে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ১ আগস্টের শুল্ক সময়সীমা, যেখানে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনামসহ ১৪টি দেশের আমদানিতে ২৪%-৪৯% শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়া হয়েছে, বাজারে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বৈশ্বিক শেয়ার বাজারে ওঠানামা লক্ষ্য করা গেছে। মার্কিন এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এবং নাসডাক সূচক প্রাথমিক ক্ষতি কাটিয়ে স্থিতিশীল হয়েছে, যেখানে ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ সামান্য নিম্নমুখী ছিল। ইউরোপ এবং এশিয়ার বাজারগুলোও তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ছিল, বিনিয়োগকারীরা ট্রাম্পের শুল্ক নীতির পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার উপর আশাবাদী। তবে, ব্রিটিশ সরকারি বন্ডের ইল্ড বেড়েছে, যা শুল্কের কারণে অর্থনৈতিক চাপ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ প্রতিফলিত করে।
চীনের সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্য আলোচনা কোনো বড় অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হওয়ায় বাজারে অনিশ্চয়তা আরও বেড়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান জানিয়েছেন, চীন মার্কিন শুল্কের বিরুদ্ধে “দৃঢ় ও কঠোর” ব্যবস্থা নেবে। এদিকে, চীনের জুলাই মাসের পিএমআই তথ্য, যা বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হবে, শুল্কের প্রভাবে উৎপাদন খাতের সংকোচন অব্যাহত থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ট্রাম্পের শুল্ক নীতি বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন ব্যাহত করতে পারে এবং মূল্যস্ফীতি বাড়াতে পারে বলে অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন। ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ড এবং ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক শুল্কের কারণে ব্যবসায়িক ঝুঁকি এবং অর্থনৈতিক দুর্বলতা বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জে.পি. মরগানের প্রধান মার্কিন অর্থনীতিবিদ মাইকেল ফেরোলি বলেন, “ফেড শুল্কের অর্থনৈতিক প্রভাব পর্যালোচনা না করা পর্যন্ত কোনো নীতিগত পরিবর্তন করবে না।”
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, শুল্ক সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসায়িক বিনিয়োগ এবং ভোক্তা ব্যয়ের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, কিছু বিনিয়োগকারী আশাবাদী যে ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত শুল্কের হুমকি থেকে পিছু হটতে পারেন, যেমনটি তিনি এপ্রিলে ৯০ দিনের জন্য “পারস্পরিক” শুল্ক স্থগিত করেছিলেন।