যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের শীর্ষ অর্থনৈতিক কর্মকর্তারা স্টকহোমে সোমবার (২৮ জুলাই) আলোচনায় বসছেন, যাতে বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের কেন্দ্রে থাকা দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক বিরোধ মোকাবিলা এবং বর্তমান যুদ্ধবিরতি আরও ৯০ দিন বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে। এই আলোচনা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে সম্প্রতি সম্পন্ন একটি বাণিজ্য চুক্তির পর এবং আগামী শরতে সম্ভাব্য ট্রাম্প-শি জিনপিং বৈঠকের আগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ইউএস ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এবং চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হি লিফেংয়ের নেতৃত্বে এই আলোচনা মে মাসের মাঝামাঝি সম্পন্ন যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনার ওপর কেন্দ্রীভূত। এই যুদ্ধবিরতি ব্যর্থ হলে ১২ আগস্টের মধ্যে একটি টেকসই চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারলে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক তিন অঙ্কের স্তরে ফিরে যেতে পারে, যা বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনকে ব্যাহত করবে। বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, কোনো বড় অগ্রগতি না হলেও আরেকটি ৯০ দিনের যুদ্ধবিরতি সম্ভাবনা রয়েছে, যা আরও উত্তেজনা রোধ করবে এবং অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে সম্ভাব্য বৈঠকের পরিকল্পনাকে সহজ করবে।
আলোচনার পটভূমিতে ট্রাম্পের চীন সফর এবং শি’র সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। সান চেংহাও, বেইজিংয়ের সিংহুয়া ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজির একজন ফেলো, জানান, এই শীর্ষ বৈঠক ফেন্টানাইল-সংক্রান্ত চীনা পণ্যের ওপর ২০% শুল্ক কমানোর সুযোগ তৈরি করতে পারে। বিনিময়ে, চীন ২০২০ সালের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মার্কিন কৃষিপণ্য ও অন্যান্য পণ্যের ক্রয় বাড়াতে পারে। তবে, চীন সম্ভবত বর্তমান ৫৫% শুল্ক হ্রাস এবং মার্কিন উচ্চ-প্রযুক্তি রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার দাবি জানাবে।
এই আলোচনা ইইউ’র সঙ্গে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক চুক্তির পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে ইইউ পণ্য রপ্তানির ওপর ১৫% শুল্ক এবং আগামী বছরগুলোতে ৭৫০ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন শক্তি ক্রয় ও ৬০০ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন বিনিয়োগে সম্মত হয়েছে। ইউএস-চীন আলোচনায় এমন কোনো বড় অগ্রগতি প্রত্যাশিত নয়, তবে বর্তমান যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা বৈশ্বিক বাণিজ্যের স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।