মধ্যপ্রাচ্যে ফের উত্তেজনার বিস্ফোরণ। গতকাল ১৩ জুন, ইসরায়েল “রাইজিং লায়ন” (Rising Lion) নামে একটি ব্যাপক সামরিক অভিযান চালিয়েছে ইরানের উপর। অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু স্থাপনা, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি এবং শীর্ষ সামরিক নেতৃত্ব।
ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ও ড্রোনের সাহায্যে ইরানের নাতাঞ্জ (Natanz) পরমাণু কমপ্লেক্সে সরাসরি হামলা চালানো হয়। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র গবেষণা কেন্দ্র এবং সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে ইসরায়েলি বাহিনী।
এই হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলুশনারি গার্ডস কর্পসের (IRGC) প্রধান হোসেইন সালামি সহ অন্তত তিনজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন।
হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরান তেলআভিভ ও জেরুজালেম লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র বাধা দিলেও তেলআভিভে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ এক বিবৃতিতে জানান, তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু-এর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং উত্তেজনা প্রশমনে আহ্বান জানান। তবে তিনি ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার সমর্থন করেন বলেও জানান।
যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি হামলায় অংশ না নিলেও ইসরায়েলকে গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সহায়তা দিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, ইরানের দিক থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি নিয়ে তাঁরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
এই ঘটনায় পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। লেবানন, সিরিয়া ও ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ইরানের পক্ষ নেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা মধ্যপ্রাচ্যের জন্য চূড়ান্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নতুন কিছু নয়, তবে এই হামলা দুই দেশের সংঘর্ষকে সরাসরি যুদ্ধের মুখোমুখি ঠেলে দিচ্ছে। পরমাণু স্থাপনায় হামলা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্যও বড় হুমকি।