ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি কীর্তনখোলা-১০-এর রুট পারমিট সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। বরিশালে কোস্ট গার্ডের দায়িত্ব পালনে বাধার অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মুহাম্মদ মোবারক হোসেন সই করা এক নির্দেশনায় বিষয়টি জানানো হয়। আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৫ জুন রাত ১১টার দিকে সদরঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া এমভি কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চের একটি প্রপেলার পোস্তগোলা ব্রিজ অতিক্রমের আগে ভেঙে যায়। এতে লঞ্চটি এক ইঞ্জিনে চালিত হচ্ছিল।
এমভি কীর্তনখোলা-১০-এর দায়িত্বরত মাস্টার শুক্কুর ও ড্রাইভার মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করলেও, বিআইডব্লিউটিএ’র পরিবহন পরিদর্শক তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভাব্য দুর্ঘটনার আশঙ্কায় লঞ্চটি সদরঘাটে ফেরানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু মাস্টার সেই নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানান এবং এক ইঞ্জিনে লঞ্চটি চালিয়ে বরিশালের দিকে অগ্রসর হন।
পরবর্তীতে বিষয়টি জানানো হলে যুগ্ম পরিচালক (নৌনিট্রা) নিজে ফোনে লঞ্চ মাস্টারকে ফিরে আসার নির্দেশ দেন, তবে তাতেও তিনি কর্ণপাত করেননি। আদেশ অমান্য করে এক ইঞ্জিনে যাত্রীবাহী লঞ্চ চালানোর ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, বিশেষ করে ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখী যাত্রীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে।
এই ঘটনার ফলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন (নৌ-রুট পারমিট, সময়সূচি ও ভাড়া নির্ধারণ) বিধিমালা, ২০১৯–এর সংশ্লিষ্ট ধারা লঙ্ঘিত হয়েছে। তাই পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এমভি কীর্তনখোলা-১০-এর রুট পারমিট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার বরিশাল নৌবন্দরে এমভি কীর্তনখোলা-১০ পৌঁছালে সেখানে যাত্রীদের সঙ্গে কোস্ট গার্ড সদস্যদের উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। এক পর্যায়ে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাতাহাতি ও বাগ্বিতণ্ডা ঘটে। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং কোস্ট গার্ড বরিশালের কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করে।
এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই বিআইডব্লিউটিএ কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেয়।