“র্যালি,আলোচনা সভা,নাটিকা প্রর্দশন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ভোলায় বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা দিবস উদযাপন করা হয়।
“নিরাপদ মাসিক ব্যবস্থাপনা আমার অধিকার ” এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে ভোলা জেলা শিল্পকলা অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিতে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহনে শহর প্রদক্ষিন করে শিল্পকলা অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়।
পরে অতিথিরা মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা দিবসে কিশোরীদের দেয়া স্টল পরিদর্শন করেন। নারীপক্ষের অধিকার এখানে, এখনই প্রকল্পের মাধ্যমে তারুণ্যের কণ্ঠস্বর প্ল্যাটফর্ম ও ইয়ুথ পাওয়ার ইন বাংলাদেশ দিবসটি উদযাপনের আয়োজন করেন।
পরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইয়ুথ পাওয়ার ইন বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক আদিল হোসেন তপু সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান। এসময় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ভোলা সিভিল সার্জন ডা.মনিরুল ইসলাম,পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান খান,জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার খন্দকার ফজলে গোফরান,জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোকাদ্দেশ আলী। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তালহা তালুকদার বাঁধন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নারীপক্ষের সদস্য রেহানা সামদানী। এসময় কিশোরীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন উম্মে হাবিবা হিয়া ও রাতিবা বিনতে জামান।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন নারীপক্ষের অধিকার এখানে, এখনই প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাকসুদা খাতুন, নারীপক্ষ অধিকার এখানে, এখনই সহকারী প্রকল্প ব্যবস্থাপক শবনম রুপা,তারুণ্যের কণ্ঠস্বর প্ল্যাটফর্মের জেলা সমন্বয়কারী আবদুল্লাহ আল নোমান সহ বিভিন্ন স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বক্তরা বলেন,মাসিককে ঘিরে কুসংস্কারের কারণে মেয়েরা এবং নারীরা মাসিকের সময় অস্বাস্থ্যকরভাবে তাদের মাসিক ব্যবস্থাপনা করেন যার ফলে তারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তাই এই সময়ে কিশোরী পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা ও প্যাড ব্যবহার করার কথা বলেন।
বক্তারা আরও বলেন, মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে সচেতনতা বাড়লে কমবে লজ্জা ও সংকোচ, বাড়বে নারীর ক্ষমতায়ন। দেশের কিশোরী ও নারীদের বড় একটি অংশ এখনো স্বাস্থ্যসম্মত মাসিক ব্যবস্থাপনা থেকে বঞ্চিত। এই অবস্থা বদলাতে দরকার পারিবারিক সচেতনতা, সঠিক স্বাস্থ্যশিক্ষা এবং সহজলভ্য স্যানিটারি পণ্যের প্রাপ্যতা। তারা আরও বলেন, এখনো অনেক পরিবারে মাসিক নিয়ে চুপচাপ থেকে মেয়েদের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আমরা চাই, মেয়েরা গর্বের সঙ্গে নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলুক।
আলোচনা শেষে পরিবেশিত হয় একটি সচেতনতামূলক মঞ্চ নাটক – লজ্জা নয়, সচেতনতা। নাটকে ফুটিয়ে তোলা হয় গ্রামের এক কিশোরীর জীবনে মাসিক শুরু হওয়ার পর তার মানসিক সংকট, পারিবারিক ও সমাজের অসচেতনতা, কুসংস্কার এবং সচেতন এক নারী শিক্ষিকার সহায়তায় তার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প।
উল্লেখ, মাসিকের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে ও এ বিষয়ে নীরবতা ভাঙতে, এবং নারী ও মেয়েরা যেন সুরক্ষিতভাবে, সম্মানের সঙ্গে তাদের মাসিক স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি পরিচালনা করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে প্রতি বছর, ২৮ মে বিশ্বব্যাপী মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস পালন করা হয়।