ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার জমির বিরোধ নিয়ে মারধরের শিকার ব্যক্তিদেরকে উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে নুরনবী সেন্টু গং এর বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে বুধবার (২১ মে) পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ডে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী আলমগীর ডাক্তারের স্ত্রী নারগিস বেগম সহ অন্যান্যরা । লিখিত বক্তব্যে নারগিস বেগম বলেন, আমার স্বামী ডা: আলমগীর তার ভাই নুরনবী সেন্টুর কাছ প্রায় ১ যুগ আগে ৩২ শতাংশ জমি কিনে দলিল সূত্রে মালিক হন । নুরনবী সেন্টুর কাছে কেনা জমি দাবি করলে তিনি জমি বুঝিয়ে দিবেন বলে বলে বছরের পর সময় পার করেন।
নুরনবী সেন্টুর চার ছেলে সাবেক কাউন্সিলর মিলন, মন্টু, ফারুক ও মঞ্জু আওয়ামী গডফাদার। বিষয়টি সমাধানের জন্য আওয়ামী আমলে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা চরফ্যাশন থানা প্রশাসনের কাছে গেলেও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা কাউন্সিলর মিলনের প্রভাবে কেউই বিচার করেননি এবং সমাধান দেন নি।
সংবাদ সম্মেলনে ডা: আলমগীরের স্ত্রী সম্প্রতি তাদের উপর হওয়া হামলার ঘটনায় বলেন, গত বুধবার (১৪ মে) বেলা সাড়ে ১২ টায় আমার স্বামী ডাঃ আলমগীর পুকুরের ঘাট সংলগ্ন ওয়াল সংস্কার করতে গেলে তার বড় ভাই নুরনবী সেন্টু ও তার ছেলে সাবেক কমিশনার ও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতা তরিকুল ইসলাম মিলনের নেতৃত্বে মিলনের ছোট ভাই মন্টু, মঞ্জু ও ফারুক সহ ৫/৭ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাঃ আলমগীরের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। তার ডাক চিৎকারে আমি এগিয়ে গেলে আমাকে বেধে মারধর করে। হামলাকারীরা আমাদেরকে মারধর করে মুমুর্ষ অবস্থায় ফেলে যায়।
আমার স্বামীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তিনি ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
নারগিস বেগম বলেন, আমাদের উপর হামলার ঘটনায় চরফ্যাশন থানায় ১৬ মে একটি মামলা করি, তার পরদিন (১৭ মে) হামলাকারীরা একই থানায় আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। তিনি বলেন, বিগত সময়ে ক্ষমতা দেখিয়ে এরা আমাদেরকে শারীরিক মানসিক নির্যাতন করতো, আওয়ামী লীগের পতনের পরও তাদের প্রভাব থামেনি। তিনি আক্ষেপ করে
বলেন, ৬-৭ জন লোক আমাদের স্বামী স্ত্রী দুইজনকে বেধড়ক মেরে, উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিলো! এ সময় নারগিস বেগম প্রশ্ন রেখে বলেন, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতা কাউন্সিলর মিলনের খুটির জোর কোথায়? এ সময় তিনি তাদের নামে দায়ের হওয়া মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানান।
একই মামলার শিকার কাশেম ডাক্তার বলেন, জমি নিয়ে আমার সাথে কোন বিরোধ নেই, এমনকি ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না।
এদিকে হামলাকারীদের দ্বারা ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
পৌর শ্রমিক নেতা নুরু সাজিসহ ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, যারা মারধরের শিকার হলো তাদের বিরুদ্ধে হামলা কারীরা কিভাবে মামলা করে? এতে করে মানুষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা হারাবে বলেও মন্তব্য করেন তারা। এলাকাবাসীর মতে, মামলাটি দ্রুত প্রত্যাহার করা না হলে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হবে।