২০২৫ সালে ইউরোপ এক জটিল ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি, যেখানে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক দুর্বলতা এবং বহিরাগত চাপ একত্রিত হয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ঐক্য ও স্থিতিশীলতাকে চ্যালেঞ্জ করছে। রাশিয়ার হাইব্রিড হুমকি, ইউক্রেন যুদ্ধ, মার্কিন নীতির অনিশ্চয়তা এবং চীনের সাথে বাণিজ্য উত্তেজনা ইউরোপকে তার কৌশলগত অবস্থান পুনর্বিবেচনার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দেশটির ভবিষ্যৎ এবং ইইউর ঐক্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। প্রো-ইইউ সেন্ট্রিস্ট নিকুশোর ড্যান এবং উগ্র-জাতীয়তাবাদী জর্জ সিমিওনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র। সিমিওনের ইইউ-বিরোধী অবস্থান এবং রাশিয়ার সাথে সম্পর্কের প্রতি ঝোঁক আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নির্বাচনের ফলাফল ইইউর অভ্যন্তরীণ সমন্বয় এবং পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার প্রভাব মোকাবেলায় প্রভাব ফেলবে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ইউরোপীয় নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। ইইউ ইউক্রেনকে আর্থিক, সামরিক এবং কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, তবে মার্কিন সমর্থনের অনিশ্চয়তা ইউরোপকে নিজস্ব প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে বাধ্য করছে। ইইউর নতুন উদ্যোগ “রিডিনেস ২০৩০” এর মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষায় €৮০০ বিলিয়ন বিনিয়োগের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য ইইউকে রাশিয়ার হাইব্রিড হুমকি এবং সম্ভাব্য আঞ্চলিক সংঘাতের বিরুদ্ধে প্রস্তুত করা।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন নীতি ইউরোপের জন্য উদ্বেগের কারণ। ট্রাম্পের ন্যাটো প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দেহ এবং ইউরোপীয় পণ্যের উপর সম্ভাব্য শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রান্সঅ্যাটলান্টিক সম্পর্ককে জটিল করছে। বিশেষজ্ঞরা মার্কিন নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রত্যাহারকে ইউরোপের জন্য একটি বড় ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন, যা ইইউকে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
চীনের সাথে ইউরোপের বাণিজ্য সম্পর্ক ২০২৫ সালে চ্যালেঞ্জের মুখে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চীনা পণ্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধি ইউরোপীয় বাজারে চীনা পণ্যের প্রবাহ বাড়াতে পারে, যা জার্মানি এবং ফ্রান্সের মতো দেশের শিল্পের জন্য হুমকি। ইইউ চীনের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছে, তবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য এই প্রক্রিয়াকে জটিল করছে।