ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে, G7 দেশসমূহ দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে অবিলম্বে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। সাম্প্রতিক মিসাইল হামলা ও পাল্টা হামলায় অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
ভারতীয় বিমান বাহিনী ৭ মে "অপারেশন সিন্ধুর" নামে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে মিসাইল হামলা চালায়, যার লক্ষ্য ছিল জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তৈয়বার ঘাঁটি। ভারতের দাবি, এই হামলায় পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করা হয়নি। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায়, পাকিস্তান "অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস" চালিয়ে ভারতের পাঞ্জাব ও কাশ্মীর অঞ্চলে সামরিক স্থাপনায় হামলা করে।
এই সংঘর্ষের ফলে দুই দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে স্কুল বন্ধ, বিমান চলাচল স্থগিত এবং হাজারো মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর একাধিক যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি করেছে পাকিস্তান, যদিও ভারত তা অস্বীকার করেছে।
G7 নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, "আমরা ভারত ও পাকিস্তানকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাই এবং সরাসরি সংলাপের মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য উৎসাহিত করি।" যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও উভয় দেশের নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এবং "গঠনমূলক আলোচনা"র জন্য সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তার "সদিচ্ছা অফিস" ব্যবহার করে মধ্যস্থতার প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, "বিশ্ব একটি সামরিক সংঘাত সহ্য করতে পারে না, বিশেষ করে যখন এটি দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে।"
এই সংকটের মূল কারণ ছিল ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পাহালগামে একটি সন্ত্রাসী হামলা, যেখানে ২৬ জন হিন্দু তীর্থযাত্রী নিহত হন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বাকে দায়ী করে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বর্তমানে, উভয় দেশই শর্তসাপেক্ষে উত্তেজনা প্রশমনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, তবে সীমান্তে সামরিক প্রস্তুতি ও পাল্টা হামলা অব্যাহত রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিস্থিতিকে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখছে এবং অবিলম্বে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।