গ্রামের মানুষ সাধারণত কৃষিকাজের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে। তারা বছরের পর বছর মাটি চাষ করে, ফসল ফলায় এবং ঘাম ঝরিয়ে তাদের সংসার চালায়। এই নিরলস পরিশ্রমের ফলাফল হলো গোলায় তোলা ধান, খড় আর সামান্য অর্থসম্পদ। কিন্তু কখনো কখনো কিছু অসৎ মানুষের কারণে সেই সঞ্চিত স্বপ্ন মুহূর্তেই ছাই হয়ে যায়।
সম্প্রতি এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার দারাজপুর গ্রামে। কৃষক জনাব মোঃ ফইমুদ্দিন তাঁর মাঠের ফসল কাটার পর খড়ের পালা করে উঠানেই স্তূপ করে রেখেছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, এই খড় দিয়ে গোয়ালের গরুগুলোকে সারা বছর খাওয়াতে পারবেন। কিন্তু সেই স্বপ্নটা অল্প কিছুক্ষণের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
রাতের আঁধারে কিছু দূর্বৃত্ত লোক তাঁর খড়ের পালায় আগুন লাগিয়ে দেয়। মুহূর্তেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে খড়। চারপাশ আলোকিত হয়ে ওঠে আগুনের লেলিহান শিখায়। প্রতিবেশীরা ছুটে এসে আগুন নেভানোর অনেক চেষ্টা করে, কিন্তু কিছুই রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। আগুনের করাল গ্রাসে পুড়ে ছাই হয়ে যায় কৃষকের কষ্টের সম্বল।
এই ঘটনা শুধু কৃষক জনাব মোঃ ফইমুদ্দীনের জন্য নয়, গোটা সমাজের জন্যই এক সতর্কবার্তা। কিছু মানুষ হয়তো হিংসা, প্রতিহিংসা কিংবা উদ্দেশ্যমূলক ক্ষতির উদ্দেশ্যে এমন কাজ করে থাকে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং নিরীহ মানুষের মনে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করে।
এই রকম অপরাধ দমন করতে হলে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে এবং সন্দেহজনক কিছু দেখলে তা দ্রুত কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
আমাদের সমাজে একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত। অন্যের ক্ষতি করে কেউ নিজে লাভবান হতে পারে না। বরং এতে ধ্বংস হয় সামাজিক বন্ধন ও পারস্পরিক বিশ্বাস। আসুন, আমরা মিলে একটি নিরাপদ, সহনশীল ও মানবিক সমাজ গড়ে তুলি।