ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় নদী দূষণ ও প্লাস্টিক/পলিথিনের অপব্যবহার রোধে জনসচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল বোরহানউদ্দিন মহিলা ডিগ্রি কলেজের মিলনায়তনে আয়োজিত এই সভায় জেন্ডার সমতা এবং জলবায়ু জোট কমিটির সদস্যবৃন্দ, স্থানীয় জনগণ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন এবং পরিবেশবান্ধব বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
সুইডেন সরকারের অর্থায়নে, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহায়তায় পরিচালিত সি আর ই এ প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজেইউএস) অনুষ্ঠানটি বাস্তবায়ন করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেন্ডার সমতা ও জলবায়ু জোট কমিটির সভাপতি মোঃ ওমর ফারুক। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রায়হান-উজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ হারুন-অর-রশিদ এবং উপাধ্যক্ষ মোঃ সোহরাব হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন সহকারী অধ্যাপক ও জোট কমিটির সদস্য মোঃ মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জিজেইউএস- সি আর ই এ প্রকল্পের সমন্বয়কারী পুষ্টিবিদ বাবুল আখতার।
বক্তারা আলোচনায় পরিবেশ সংকটের ভয়াবহতা তুলে ধরে বলেন, নদী দূষণ ও প্লাস্টিক-পলিথিনের অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে। তারা বলেন, নদী কেবল একটি জলাধার নয়, এটি জীবন্ত প্রাণের প্রতীক—যা কৃষি, জীববৈচিত্র্য এবং মানবজীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। নদী দূষণের প্রভাব কেবল জলজ প্রাণীর ওপর নয়, বরং মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যেও মারাত্মকভাবে পড়ে।
সভায় বক্তারা নাগরিক দায়িত্ববোধের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, পরিবেশবান্ধব জীবনধারার প্রতি জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। কাপড় বা পাটের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার, পলিথিন বর্জন, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ পরিষ্কার রাখা এবং সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে টেকসই ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
আলোচনার পর কলেজ প্রাঙ্গণের সামনের সড়কে এক শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। ভোলা-চরফ্যাসন মহাসড়কের পাশে আয়োজিত এই মানববন্ধনে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তারা সচেতনতামূলক প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার হাতে নিয়ে জনসাধারণকে নদী রক্ষা ও পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহারের আহ্বান জানান।
আয়োজকদের মতে, এই উদ্যোগ কেবল একটি দিনের বা একটি সভার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনের সূচনা, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। স্থানীয় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এটাই প্রমাণ করে যে পরিবেশ রক্ষায় এখনই সম্মিলিতভাবে কাজ শুরু করা জরুরি।