বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেখানে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, এই শিক্ষকরাই সবচেয়ে বেশি অবহেলিত ও আর্থিক সংকটে দিন কাটাচ্ছেন। সরকারি বেতন-ভাতার আওতায় না থাকায় তারা বিনা পারিশ্রমিকে বা নামমাত্র সম্মানীতে কাজ করছেন, যা ন্যূনতম মানবিক জীবনযাপনের জন্যও যথেষ্ট নই।
বেশিরভাগ নন-এমপিও শিক্ষক মাসের পর মাস বিনা বেতনে বা খুবই সামান্য বেতনে কাজ করতে বাধ্য হন।উপার্জন না থাকায় তাদের অনেকেই ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং পরিবার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। জীবিকা নির্বাহের জন্য অনেকেই শিক্ষাক্ষেত্র ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন, যা শিক্ষার গুণগত মানের জন্য ক্ষতিকর। শিক্ষক হিসেবে সমাজে সম্মান থাকলেও অর্থনৈতিক দৈন্যদশার কারণে তারা সমাজ ও পরিবারের কাছে উপেক্ষিত হচ্ছেন।
অবিলম্বে নন-এমপিও শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করতে হবে।যারা বছরের পর বছর এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় আছেন, তাদের দ্রুত এই সুবিধার আওতায় আনতে হবে
চাকরির নিশ্চয়তা ও ন্যায্য বেতন নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকদের অন্তত জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় বেতন কাঠামো নিশ্চিত করা দরকার।অস্থায়ীভাবে হলেও সম্মানী প্রদান করতে হবে।এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন ভাতা বা সম্মানী চালু করা প্রয়োজন। সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা ও অবসর সুবিধার আওতায় আনতে হবে।নিয়োগ ও পদোন্নতির স্বচ্ছ নীতিমালা তৈরি করতে হবে।নন-এমপিও শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ যেন অনিশ্চিত না থাকে, সে জন্য নীতিমালা বাস্তবায়ন জরুরি।
নন-এমপিও শিক্ষকদের এই মানবেতর জীবনযাপন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় সংকেত। তাদের দুর্দশা লাঘব করা সরকারের নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব। তাই, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে সরকার এগিয়ে আসবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।