ভাঙ্গায় সড়কে অব্যবস্থাপনায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ভাঙ্গা হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ে বিশ্বরোড গোল চত্বর, এখান থেকে ভাঙ্গা-ফরিদপুর, ভাঙ্গা-খুলনা, ভাঙ্গা-বরিশাল, মহাসড়কগুলো দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, লড়ি চলাচল করে। পদ্মা সেতু হওয়ার পর এই মহাসড়কে যানবাহন ও যাত্রী চাপ বেড়েছে শত গুণ। ঢাকা-ভাঙ্গা এলিবেট এক্সপ্রেস হলেও বরিশাল ভাঙ্গা ও ফরিদপুর ভাঙ্গা মহাসড়কের বেহাল দশা হওয়ায় এ রাস্তায় প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয় যাত্রীরা। বর্তমানে সড়ক ও জনপদ বিভাগ ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কটি প্রশস্তের কাজ হাতে নিয়েছে, অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের ধীরগতিতে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা।
ভাঙ্গা-টেকেরহাট মহাসড়কের দুই পাশে রাস্তা খননে গর্তের কারনে গত একমাসে (ফ্রেব্রয়ারী) ১০টি দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন। ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অব্যবস্থাপনায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা এমনটাই বলেছিলেন পথচারীরা ও স্থানীয়রা। সরকারি হিসাব মতে মহাসড়কে গত এক মাসে কমপক্ষে অর্ধশত ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।
পথচারীরা ও স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, মহাসড়কের উপর ছোট বড় গর্তের কারণে প্রতিদিন ভ্যান, অটো, নসিবন, করিবন, হোন্ডা সহ বিভিন্ন যানবাহন গুলো দুর্ঘটনা ঘটছে। বেসরকারী হিসাব মতে গত এক মাসে কমপক্ষে ৪০/৫০ টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে অনেক লোক নিহত ও আহত হয়েছে। ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতায় বরইতলা পর্যন্ত সড়কে সম্প্রসারণের কাজ চলমান রয়েছে। রাস্তার কাজ দু'পাশে ৬ ফিট করে চওড়া ও ৪ ফিট গভীর করে নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। তবে অব্যবস্থাপনা নিরাপত্তা ও সতর্কীকরণ তেমন কোন বিলবোর্ড বা সাইনবোর্ড অথবা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোন শ্রমিককের কোন কার্যক্রম চোখে পড়ার মতো দেখা যায় না। রাতের বেলায় রাস্তার দুই পাশে গর্ত থাকায়, নতুন চালকদের দেখার মত কোন নিরাপত্তা বা সতর্কবার্তা না থাকায়, কোন প্রকার কোন লাইটিং না থাকায় হঠাৎ করেই তারা দুর্ঘটনা শিকার হচ্ছে। ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আরিফ হোসেন বাবলুর দায়িত্বে অবহেলায় কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়কে তদারকি না করা, অফিসে ঠিক মত না আসা সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এলাকাবাসী জোরদাবি, ভাঙ্গা হতে বরিশাল পর্যন্ত যে প্রশস্ত করণের কাজ হচ্ছে তা অতি দ্রুতভাবে কাজ শেষ করা প্রয়োজন। প্রতিটি মোড়ে বাক সোজা করে রাস্তার ডিভাইডে করা হলে দুর্ঘটনা কমবে বলে মনে করেন অনেকে। এছাড়া রাস্তা প্রশস্ত করণের কারনে চোখে পড়ার মতো কোনো সিগনাল বাতি না থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও দেখভাল করা কর্মকর্তা আরিফের শাস্তি মূলক ব্যবস্থা সহ অন্যত্র বদলির জোর দাবি জানায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিযোগ করে বলেন, দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে জনগণের টাকায় বেতন তুলে খাচ্ছে এরা। এই বেতনের টাকা খাওয়া জায়েজ হবে না।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি মোহাম্মদ রোকিবুজ্জামান বলেন, ভাঙ্গা উপজেলার সড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছে। সড়কে নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
সড়ক গুলো অত্যন্ত খারাপ, যে কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়কে রাত দিন ২৪ ঘন্টা কাজ করে দ্রুত কাজ শেষ করা দরকার। সড়কে কাজ দ্রুত শেষ হলে দুর্ঘটনা কিছুটা হলেও কমে আসবে বলে আমি মনে করি।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ আবু জাফর জানান, মহাসড়কের প্রশস্ত করনের কারণে দুই পাশে বড় বড় গর্ত করা হয়েছে, অথচ কোন সতর্কবার্তা বা কোন লাইটিং ব্যবস্থা না থাকায়, এবং ধীরগতিতে কাজ হওয়ার কারণে হোন্ডা আরোহী সহ বিভিন্ন যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে। প্রতিনিয়ত হতাহতের ঘটনা ঘটছে, গত এক মাসে গর্তে পড়ে ৭টি দুর্ঘটনায় ২জন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছে। গতকাল রাতে গর্তে পড়ে মটর সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। তবে অনেক দুর্ঘটনার সংবাদ আমরা পাইনা। যাহার কারণে দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তা (এসও) আরিফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান,
আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করছি, আপনারা তো দেখেন না। সড়কে উপর কোন গর্ত নাই। আপনারা সাংবাদিকরা একটু বেশি দেখেন। আমাদের এভাবেই নির্মাণ কাজ করা হয়ে থাকে। আর সড়কে দুর্ঘটনা ঘটলে আমাদের কিছু করার নাই।