খাগড়াছড়ির রামগড় থানার পাতাছড়া ইউনিয়নের রাজারঘাট গ্রামে গত ২২ আগস্ট রাতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক নারী। এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকালে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ রামগড় শাখার আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ রামগড় শাখার সভাপতি গুলমনি চাকমা। তিনি বলেন, "এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।" তিনি আরও বলেন, "গ্রামের মুরুব্বিদের সঙ্গে আলোচনা করে ভুক্তভোগীর পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে তার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।"
সংবাদ সম্মেলনের পাশাপাশি খাগড়াছড়িতে বিভিন্ন পাহাড়ি সংগঠন এই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে। শুক্রবার রামগড়-ঢাকা সড়কের নাকাপা বাজার এলাকায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), ডেমোক্র্যাটিক ইয়ুথ ফোরাম (ডিওয়াইএফ), ও পার্বত্য নারী সংঘের আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারীরা ধর্ষকদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে স্লোগান দেন।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, "আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনেক পাহাড়ি নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হলেও দোষীরা বিচারের আওতায় আসেনি।" এই ধরনের ঘটনায় বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে বলে তারা উল্লেখ করেন।
ভুক্তভোগীর এক আত্মীয় জানান, ঘটনার দিন রাত ১১টার দিকে আট থেকে ১০ জনের একটি দল ৪০ বছর বয়সী ওই নারীর বাড়িতে হানা দেয়। প্রতিরোধের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ভুক্তভোগী। পরে মেয়েকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও একটি খালের সামনে আটকে যান তারা। সেখান থেকে মা ও মেয়েকে কলাবাগানে টেনে নিয়ে যায় অপরাধীরা, যেখানে ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়। তবে তার মেয়ে পালিয়ে বাঁচতে সক্ষম হন।
এদিকে, টানা বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। জেলার একাধিক এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যা পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুলেছে।
অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনসহ জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীদের সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে আন্দোলন জোরদার হচ্ছে, এবং এই ঘটনার দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচার চাইছে পাহাড়ের জনগণ।